বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির শায়খুল হাদীস আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, কক্সবাজারের সন্তান বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদকে গুমের পেছনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছে ভারত। আন্তর্জাতিকভাবে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এর বিচার চাই। সালাহউদ্দিন ফিরে আসলেও ফিরে আসেননি ইলিয়াছ আলীসহ আরও অনেকেই। যতগুলো মানুষ গুম হয়েছে আমরা তার প্রত্যেকটির বিচার চাই। যাদের জুডিসিয়াল কিলিং করা হয়েছে সব হত্যার বিচার চাই। প্রতিটি খুনের জন্য শেখ হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। গণহত্যার দায়ে ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে খেলাফত মজলিস কক্সবাজার জেলা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচার, জুলাই–আগস্ট বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে আলেম সমাজের অবদানের স্বীকৃতি ও খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খেলাফত মজলিস কক্সবাজারে এই গণসমাবেশের ডাক দেয়।
মামুনুল হক বলেন, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের এমন দশা করে দিয়ে গেছেন আগামী ১০০ বছরে এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নাম মুখে নেবে না। হাসিনা অর্থ–সম্পদ আগেই পাচার করে দিয়েছেন। সন্তান–স্বজনদের বিদেশে স্যাটেল করে দিয়েছেন। সবকিছু গুছিয়ে নেতাকর্মীদের ফেলে তিনিও পালিয়ে গেছেন। ছাত্রলীগ–যুবলীগের নেতাকর্মী যারা শেখ হাসিনার কথায় যা ইচ্ছা তাই করেছিলেন সেসব নেতাকর্মীদের কথা তিনি একবারের জন্যও ভাবেননি। এখন কোন মুখে শেখ হাসিনার কথা বলেন সেই নেতাকর্মীরা, আপনাদের লজ্জা–শরম নেই?
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের প্রসঙ্গ টেনে আল্লামা মামুনুল হক বলেন, বিগত ১৫ বছর বাংলাদেশ আইয়ামে জাহিলিয়াতের যুগ ছিল। শেখ হাসিনা প্রতিশোধের রাজনীতি করতে গিয়ে দেশকে আই্যয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে পরিণত করেছিলেন। সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার প্রতিশোধ নিতেই এমন নৃশংস রাজনীতি করেছেন তিনি। ভারতকে উদ্দেশ্য করে মামুনুল হক বলেন, আপনারা শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা তাই বলছেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। এমন আচরণ করবেন না। যদি করেন তাহলে বাংলাদেশে মানুষ আপনাদের সাথে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাববে। বাংলাদেশের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইলে পররাষ্ট্র নীতি সংস্কার করুন।
এসময় তিনি ৭২ এর সংবিধান মুছে ফেলতে হবে বলে দাবি জানান এবং কোরআন–সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন সংবিধানে সংযোজন করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন। খেলাফত মজলিস কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আবছার উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা ইউসুফ আশরাফ, নায়েবে আমীর আল্লামা আলী ওসমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফর রহমান কাজল, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমির, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ফয়সাল আহমদ প্রমুখ।