প্রতিটি ফাইলেই ঘুষ নিতেন রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব

গ্রেপ্তার মাইনুদ্দীনের জবানবন্দি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ

আমদানিকারকের কাছ থেকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় প্রতিটি ফাইলেই ঘুষ নিতেন বলে জানিয়েছেন একই সময় গ্রেপ্তার হওয়া তার সঙ্গী মাইনুদ্দীন। গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি এ কথা জানান। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, রাজীব রায়ের টেবিলে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ টি ফাইল থাকতো। ফাইল ঠিক থাকুক আর না থাকুক তিনি প্রতিটি ফাইল থেকেই ঘুষ নিতেন। তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন তথা গত মঙ্গলবার রাজীব রায় আমাকে ডেকে নেন এবং তার ড্রয়ারে একটি টাকার খাম আছে বলে জানিয়ে তা আমার কাছে রাখতে বলে। আমি যখনই খামটি পকেটে ঢুকিয়ে নিই তখন দুদকের টিম আমাকে ধরে ফেলে। তিনি আরো বলেন, ৪ থেকে ৫ মাস যাবৎ রাজীব রায় প্রতিদিনই ঘুষের টাকা রাখতে দিতেন।

দুদক পিপি মোকাররম হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আদালতে হাজির করা হলে মাইনুদ্দীন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনায় দায় স্বীকার করে নিয়েছেন। পরে রাজীব রায় ও তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। আমদানীকারকের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের সময় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় ও তার সঙ্গী মাইনুদ্দীনকে গত মঙ্গলবার হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে দুদক। ফাঁদ অভিযান পরিচালনা করে কাস্টমস হাউসের দ্বিতীয় তলার শুল্কায়ন সেকশন(বি) থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

দুদক জানায়, হোমল্যান্ড প্লাস্টিক স্যু ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর এবং মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা আমির হোসেন কারখানার পণ্য উৎপাদনের জন্য জাপান থেকে ৬ হাজার ৪ শত ২৮ মার্কিন ডলারের ব্রিক অ্যাক্রেলিক মিঙড প্লাস্টিক এন্ড স্ক্র্যাপ আমদানি করেন। উক্ত আমদানিকৃত পণ্য পোর্ট থেকে ছাড়করণের জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস দাখিল করা হয়। কিন্তু কাস্টমস হাউসের শুল্কায়ন সেকশন(বি)-এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় ও মো. ছারওয়ার উদ্দিন পণ্য ছাড়করণের জন্য তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। একপর্যায়ে তারা তার কাছে তাদের অফিস নির্ধারিত ঘুষের রেট ছাড়াও আরো অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। অন্যথায় তারা পণ্য ছাড়করণের ব্যবস্থা করবেন না এবং পণ্য পোর্ট ও কন্টেইনার ডেমারেজ পূর্বক নিলামে বিক্রির হুমকি দেওয়া হয়। পুরো বিষয়টি হোমল্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রির প্রোপাইটার আমির হোসেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম১ কে অবহিত করলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম১ সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধির আলোকে ঘুষ দাবিকারী শুল্ক বিভাগের রাজস্ব কর্মকর্তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ফাঁদ অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। ঘুষ গ্রহণের এ ঘটনায় রাজীব রায় ও তার সঙ্গী মাইনুদ্দীনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমনোনয়নপত্র নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরও ৪১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত, ১৮ জনের চিকুনগুনিয়া