চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেছেন, একটি সুশৃঙ্খল, চিরায়ত শান্তির নীড় হিসেবে গ্রামগুলোকে তৈরির জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতকে সক্রিয় করতে হবে। গ্রাম আদালত চিরায়তভাবে গ্রামে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যতম ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে অনেক ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকলেও, গ্রাম আদালত বিধিমালা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের যেকোন সদস্যের মাধ্যমে গ্রাম আদালত পরিচালনা করা সম্ভব।
গতকাল সোমবার নগরীর পিটিআই মিলনায়তনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালতের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক অর্ধ–বার্ষিক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, গ্রামের পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সহজে, কম খরচে, ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য গ্রাম আদালতকে সক্রিয় করার কোন বিকল্প নেই। এ সময় তিনি সভায় উপস্থিত চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সকল ইউনিয়নের ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
চট্টগ্রাম জেলার স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক মো. নোমান হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে ২০২৪ সালের কার্যক্রমের অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জগুলো ও শিক্ষণীয় দিক নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্প ৩য় পর্যায় চট্টগ্রাম জেলার জেলা ব্যবস্থাপক সাজেদুল আনোয়ার ভুঞা। প্রবন্ধ পর্যালোচনায় উঠে আসে বিগত ১১ মাসে চট্টগ্রাম জেলায় ২,২৪৬টি অভিযোগ গ্রাম আদালতে সরাসরি দায়ের করা হয়েছে। এবং জেলা আদালত হতে ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতে ৫১৫ টি প্রেরণ করা হয়েছে। মোট ২,৯৯৬ টি মামলার মধ্যে এর মধ্যে গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে ১,৪০৫টি মামলা। ক্ষতিপূরণ আদায় হয়েছে ৪০ লক্ষ ৯২ হাজার ৪ শত টাকা। জুলাই হতে সেপ্টেম্বর ৩ মাসে ১৯১ ইউনিয়নে মামলা গ্রহণ নিস্পত্তি প্রায় স্থবির থাকলে অক্টোবর মাস হতে মামলা গ্রহণ নিস্পত্তি আবার চালু হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালের শেষ ৩ মাসে ১৯১ টি ইউনিয়নে ১৮৩ টি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ১০৪ টি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ না থাকার কারণে ও গ্রাম আদালতের বিচার কাজ স্থবির হয়ে চলছিল। বর্তমানে ১৯১ টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ২৮ টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান বর্তমান আছেন ৭৯ টি ইউনিয়নে প্রশাসক দায়িত্ব পালন করছেন। এর বাইরে ৮৪টি ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আলাউদ্দিনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরীন, ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী, ইপসা’র পরিচালক (সামাজিক উন্নয়ন) নাছিম বানু, বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্প ৩য় পর্যায়ের প্রকল্প সমন্বয়ক ফারহানা ইদ্রিস ও কক্সবাজার জেলা ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোহন উদ্দিন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।