ফেসবুকে নিজেকে ইংল্যান্ডের নাগরিক পরিচয় দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে চট্টগ্রামের এক মাদ্রাসা শিক্ষক থেকে ১০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা হয়েছে। পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ চাকমা মামলার বিষয়টি স্বীকার করে আজাদীকে বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
মামলায় পাঁচলাইশের ইদারাতুল কুরআন মডেল হিফজ মাদ্রাসার শিক্ষক আইয়ুবুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর ফেসবুকে নিজেকে ইংল্যান্ডের নাগরিক এবং চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে উইলিয়াম স্মিথ নামে ফেসবুক আইডি ব্যবহারকারী তার হোয়াটস অ্যাপ নম্বর চাইলে তিনি তাকে হোয়াটস অ্যাপ নম্বর দেন। তখন উক্ত ফেসবুক আইডি ব্যবহারকারী তার হোয়াটস অ্যাপ নম্বর +২২৯৫৯৭৯১৮৬৫ থেকে মাদ্রাসা শিক্ষকের হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে নক করে। তাদের মধ্যে হোয়াটস অ্যাপে মাঝেমধ্যে যোগাযোগ হত। এরই ধারাবাহিকতায় ২১ জানুয়ারি উইলিয়ামস স্মিথ জানায় বাংলাদেশে ব্যবসা করবে। সেই সুবাদে উপহার হিসেবে আমার জন্য দুই লাখ ইউএস ডলার ও কিছু মালামালসহ একটি পার্সেল পাঠিয়েছে। ২২ জানুয়ারি তার এ দেশের নারী সহযোগী বিমানবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা (কাস্টমস অফিসার) পরিচয়ে মাদ্রাসা শিক্ষককে ফোন করে বলেন, তার নামে একটি পার্সেল বিমানবন্দরে এসেছে। পার্সেলটি সরবরাহ করতে কাস্টমস চার্জ হিসেবে ৪৫ হাজার টাকা বিকাশ বা ব্যাংক হিসাব নম্বরে পরিশোধ করতে হবে। ২২ জানুয়ারি বিকাশ ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা থেকে তিনি টাকাগুলো পাঠান।
প্রতারকচক্রটি বাদীকে জানান, যেহেতু পার্সেলে অতি মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে এবং এভাবে বিদেশ থেকে কোনো পার্সেল দেশে আনা আইনসিদ্ধ নয়, তাই চার্জ একটু বেশি দিতে হবে। নকল টিন সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজ বানাতে অনেক অর্থের প্রয়োজন হবে। তারা ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা দাবি করে। তিনি বিষয়টি তার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হাফেজ মাওলানা ক্বারী জুবায়েরকে জানান। তিনি বিস্তারিত শুনে উক্ত পার্সেল গ্রহণের জন্য বাকি টাকাগুলো ধার দেন। সর্বশেষ ২৪ জানুয়ারি ৫ লাখ টাকাসহ ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট নম্বর ০১৭৩৩৮১৬৪৪২০ থেকে ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৩০০ টাকা পাঠান। এরপর তাদের দেওয়া পার্সেলটির কোনো হদিস মিলেনি। এ ব্যাপারে গত ৩ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানায় আইয়ুবুল ইসলাম বাদী হয়ে প্রতারণার বিষয়ে একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর–০৩।