প্রচারণায় প্রাধান্য নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন ও এলাকার উন্নয়ন

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচন

এম নুরুল ইসলাম, আনোয়ারা | রবিবার , ১২ মে, ২০২৪ at ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে আনোয়ারায় এবারের পরিস্থিতি কিছুটা অন্যরকম। স্থানীয় রাজনীতিতে সরকারি দল আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মেরুকরণে গুরুত্ব বেড়েছে ভোটার ও নেতাকর্মীদের। প্রতীক বরাদ্দের আগেই জোরালো প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন প্রার্থীরা। মূলত বিগত সময়ের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন ও এলাকার উন্নয়ন এই দুই ইস্যু প্রাধান্য পাচ্ছে প্রচারণায়।

আগামীকাল রোববার আনোয়ারায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী, সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক দুই সপ্তাহ ধরে প্রচারণায় সরব আছেন। এখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সমর্থন পাচ্ছেন চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুগ্রীব মজুমদার দোলন। সাংসদের ঘনিষ্ঠ নেতারা এড়িয়ে চললেও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীর সাথেও আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।

আর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক পাচ্ছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়শা খান অনুসারীদের সমর্থন। এছাড়া স্থানীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিন উপেক্ষিত পদবঞ্চিত তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হকের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তারা মোজাম্মেলকে জয়ী করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রীর

অনুসারীদের পাল্টাপাল্টিতে বেড়েছে নির্বাচনী উত্তাপ। ভোটাররাও অনুভব করছেন নির্বাচনী আমেজ। গতকাল শুক্রবার প্রধান তিন প্রার্থীই বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় করেছেন। অতীতের ভুলত্রুটি ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়া, ধারাবাহিক উন্নয়নের কথা বলে ভোট চেয়েছেন। আবার কেউ দুর্বৃত্তায়ন ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ভোটারদের পাশে থাকার অনুরোধ করেছেন।

এবার ভোটারদের চাওয়া কী এই প্রশ্নে বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, গত দুই মেয়াদে আমি উপজেলার ১১ ইউনিয়নে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন করেছি। নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রেখেছি। দায়িত্ব পালনকালে মানুষের সাথে মিলেমিশে ছিলাম। কারো প্রতি অন্যায় অবিচার করিনি। সাধারণ মানুষ এটাতেই সন্তুষ্ট। মাদক নির্মূল, এলাকার উন্নয়ন, আনোয়ারা হাসপাতালের মানোন্নয়ন, পল্লী বিদ্যুতের ভোগান্তি, সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাং এই বিষয়গুলোই প্রচারণায় প্রাধান্য পাচ্ছে।

আরেক প্রার্থী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অধিকার ফিরিয়ে দিতেই আমার নির্বাচনে অংশ নেয়া। মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা চাইছে। সেই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কেন্দ্র দখল, ব্যালট

ছিনতাই, জনগণকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ। ব্যালটের মাধ্যমে জনগণ দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে জবাব দেবে। তিনি বলেন, পরিকল্পিত উন্নয়ন, লুটপাট বন্ধ, টেকসই বেড়িবাঁধ, পারকিতে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র, হাসপাতাল ও চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন, কর্মসংস্থান, স্কুলকলেজে আধুনিক শিক্ষা ও মেধাচর্চা এসবই প্রচারণায় প্রাধান্য পাচ্ছে।

আরেক প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। অবশ্য আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসীমউদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে চেয়ারম্যান পদে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম..মান্নান চৌধুরী আর ভাইস চেয়ারম্যান হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুগ্রীব মজুমদার দোলনকে দলের সমর্থন দেয়া হয়েছে। আর সাবেক ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপিও পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। তাছাড়া দলের নেতাকর্মীরা একযোগে এম.. মান্নান আর দোলনের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। ইনশাআল্লাহ এলাকার জনগণ আমাদের সাথে আছেন আমরা বিপুল ভোটে জয়ী হব।’

নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ প্রসঙ্গে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত ক্লিন ইমেজ ও সাধারণ মানুষের প্রতি ভাল ব্যবহারের বিষয়টি সাধারণ ভোটারদের মাঝে এবার বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুই নম্বর গেট ও ষোলশহর এলাকায়
পরবর্তী নিবন্ধএনআইডি : প্রবাসীদের আবেদন সাত দিনে নিষ্পত্তির নির্দেশ