প্রকৌশলীর চাকরি ছেড়ে হয়েছেন পুরোদস্তুর কৃষক। বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষের পাশাপাশি করেছেন বিদেশি সবজি ও মাছ চাষ। আর তাতেই ‘সফলতা’ পেয়েছেন সীতাকুণ্ড উপজেলার বারৈয়ারঢালা এলাকার ইদ্রিসের ছেলে প্রকৌশলী কামাল পারভেজ। বর্তমানে তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের আধা কিলোমিটার পশ্চিমে বারৈযারঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াল এলাকায় যতটুকু দৃষ্টি যায় সবজি ক্ষেত। তার মধ্যে প্রকৌশলী কামাল পারভেজের রয়েছে ৩৫০ শতকের জায়গা জুড়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষেত। এছাড়াও তিনি পুকুরে মাছ চাষ করেন। তবে ৭০ শতাংশ জমিতে করা জাপানের বিটরুট চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তিনি। ক্ষেতে গিয়ে দেখা হয় কামাল পারভেজের সাথে। তখন ক্ষেত থেকে লাউ তুলছিলেন তিনি। কাজের ফাঁকে কথা হয় তার সাথে, শোনান প্রকৌশলীর চাকরি ছেড়ে কৃষক হয়ে উঠার গল্প।
কামাল পারভেজ বলেন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শেষ করি। এরপরে চট্টগ্রাম নগরীতে একটি প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে চাকরি পায়। প্রথম পর্যায়ে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেতাম, ছয় মাস পরে বিশ হাজার টাকা হয়। কিন্তু চাকরিতে যে পরিমাণ শ্রম দিতাম সে পরিমাণ অর্থ পেতাম না। তখন মাথায় চিন্তা আসে কৃষিতে যদি এর থেকে কম সময় ও শ্রম দিই তাহলে এর থেকে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারব। পরে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে এসে কৃষিতে মন দিই। এরপরে ৩৫০ শতক নিজের জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করি। সবজির মধ্যে রয়েছে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচামরিচ, ফুলকপি, বেগুন, ঢেঁড়স, শিম, বিটরুট। আল্লাহর রহমতে ভালো ফল পাচ্ছি। একদিন পরপর সাত থেকে আট হাজার টাকার বিভিন্ন ধরনের সবজি বিক্রি করছি। কৃষিকাজের পাশাপাশি পুকুরে মাছ চাষ করছি। প্রতিদিন দুইজন শ্রমিক কাজ করে ক্ষেতে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের কৃষি উদ্যোক্তা কামাল পারভেজকেও কৃষি বিষয়ে যাবতীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সে এত লেখাপড়া করেও কৃষিতে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন, এমন ঘটনা কমই দেখা যায়। আমি আশাবাদী তার যে চেষ্টা তা তাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। তবে পারভেজের জমিতে বিটরুট চাষে ভালো ফলন হয়েছে। এটি তার কৃষিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। তিনি বলেন, এবার বারৈয়াঢালা ও ভাটিয়ারী এলাকায় ৭০ শতাংশ জমিতে বিটরুট চাষ হয়েছে। সাধারণত শীতকালীন মৌসুমে বিটরুট চাষ করা হয়। আশা করা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোয় বিটরুটের আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।