সামপ্রতিক নাশকতার ঘটনায় ‘প্রকৃত কোনো আলেম বা বুজুর্গ’ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি মন্তব্য করে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, ফৌজদারী অপরাধে অপরাধী ‘আলেম নামধারী ক্ষমতালিপ্সু ও ষড়যন্ত্রকারীদেরই’ আইনের আওতায় আনা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা বিলের সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর সংসদ সদস্যদের দেওয়া বক্তব্যের জবাবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ও রুমিন ফারহানা সামপ্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টেনে এর সমালোচনা করেন। খবর বিডিনিউজের।
জবাবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো পর্যায়ে কোনো বুজুর্গ ব্যক্তি ও প্রকৃত আলেম গ্রেপ্তার বা মামলার আওতায় আসেননি। কেবলমাত্র আলেম নামধারী কিছু অর্থ ও ক্ষমতালিপ্সু ব্যক্তি, যারা বিভিন্ন ফৌজদারী অপরাধে জড়িত; যারা ধর্মের নামে রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক কাজে জড়িত, তারাই আইনের আওতায় এসেছে। যদি অন্যায়ভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকে, প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হোক। এবং ইতোমধ্যে বহু আলেমকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যারা দোষী ব্যক্তি, তাদের বিরুদ্ধেই এ আইনগেত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে বিলটি পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিএনপির হারুনুর রশিদ বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে আজকে আমরা কী দেখছি। ধর্মীয় স্কলার- যাদের আমরা আলেম বলি, তারা সাংঘাতিক নিপীড়নের মধ্যে রয়েছে। তারা রিমান্ড ও গ্রেপ্তারের সম্মুখীন। তাদের দয়া করে মুক্তি দিন। তিনি বলেন, দেশের শীর্ষ ৫৬ জন আলেমের বিরেুদ্ধে দুদক নোটিস দিয়েছে। আমি মনে করি আলেমদের আগে আমাদের সাড়ে তিনশ এমপির বিরুদ্ধে দুদক নোটিশ দিলে তা সমাদৃত হত।
সংসদে বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি রুমিন ফারহানা বলেন, কোথায় মামলা করব? কার কাছে মামলা করব? কার কাছে অভিযোগ করব? কেউতো জিডি নিতে রাজি হচ্ছেন না- কথাটি বলছিলেন ত্ব-হার (আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান) স্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন এবং তার সঙ্গে আরো তিন ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নাই। একই সময় একই ধরনের অভিযোগ করতে দেখেছি চিত্র নায়িকা পরীমনিকে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিনি ভাগ্যবতী। কারণ তার মামলা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি তার (ত্ব-হা) পরিবারের। সেই সৌভাগ্য হয়নি বাংলাদেশের ৬০৪টি পরিবারের, যারা দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ। তাদের ব্যাপারে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু বলছে, লোকাল পুলিশ স্টেশন কিছু বলতে পারছে না।