সুতীব্র চিৎকারে ভূমিষ্ঠ শিশু জানিয়ে দেয় জীবন মানেই প্রাণের স্পন্দন, বহমান জীবনের চঞ্চলতা। কালের আবহে শৈশব হারায় কৈশোরে, কৈশোর হারায় যৌবনে, যৌবন নতজানু প্রৌঢ়ত্বে। তারপর বার্ধক্য। সেও হারিয়ে যায় মৃত্যুতে! অমোঘ নিয়ম খন্ডানোর কোন সাধ্য কারও নেই। তবুও মানেনা মন। মেনে নিতে কষ্টের পাহাড় ডিঙানো মানুষ জীবিত কালে কত শতবার মরে সে হিসাব সে কি করে কখনও? নিয়তি বলে সঁপে দেয় নিজের ভিতরের নিজকে মৃত্যুর কাছে। নির্মল বাঁচার আনন্দ যা তা থেকে বঞ্চিত করে ধুকে ধুকে মরে প্রতি পদে পদে। হাতের কাছে ধরা দেয় বাঁচার যে সঞ্জীবনী তাকে মনে করে অপাংক্তেয়! ঘুরে মরে অযাচিত পার্থিব বস্তুর অন্বেষণে। বাড়ির আঙিনায় ভোরের ঝরা শিউলী বা রাতের হাছনাহেনা কিংবা মানুষের সুন্দর মন কত অনাবিল সুখ বয়ে দিতে পারে হৃদয়ে তা কি সাধারণ মাপের মানুষের বোধগম্য হয় না কখনও! আমি তো পূর্ণিমার রাতে যে প্রেম খুঁজে পাই পৃথিবীর কোন ঐশ্বর্য দিয়ে তা কেনা যাবে না। মনের মানুষটাকে প্রতি নিঃশ্বাসে ভালবেসে যে সুখ তার সমতুল্য আনন্দের মূল্য কে দিতে পারে!
ঘৃণায়, বিদ্বেষে, লোভে, ক্ষোভে, হিংসায়, স্বার্থপরতায় যে হৃদয় মুড়িয়ে রেখে মানুষ চলে সে কি কখনও ভালোবেসে দেখেছে সর্বজনে কী পরম সুখ পায় নাজুক হৃদয়টা? আমি ভালোবাসি প্রকৃতির সবকিছুই সৃষ্টিকে। তোমাকে, আমাকে। সেখানেই আমার ঈশ্বর, আমার সৃষ্টিকর্তা। এই বিশ্বাসই আমার বাঁচার প্রেরণা। আমার শূন্যতার পরিপূর্ণতা।
আমি উচ্চারিত সত্য বলে প্রখর সূর্যের আলোকে দাঁড়িয়ে যেকোন সত্যকে গ্রহণ করার সাহস রাখি, সেটাই আমার জীবনের সুখ। আমি জীবনের প্রয়োজনে ভালোবাসি, জীবনের আনন্দযজ্ঞে সাথে চলি, দুঃখে কাঁদি, মানুষের আঘাতে কষ্ট পাই। কিন্তু নিঃশেষ হইনা ঘৃণা, বিদ্বেষ, হিংসার আগুন জ্বেলে। আমি প্রকৃতির নিয়মে তাই একবারই মরি। তাই যাদের ঈশ্বর ভাগ করা তাদের বলতে চাই, পথ ছেড়ে দাও, আমি একলা নিতাই সে ভালো। পরিশেষে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, জগতের সকল মানুষ সুখী হোক, আনন্দ ও শান্তিতে বাঁচুক এই কামনা করি। ভালোবাসা অনিঃশেষ।