ফটিকছড়ির ধর্মপুরে দীর্ঘদিনেও শেষ হয়নি মুহাম্মদ তৌকিরহাট থেকে আমিরহাট রাস্তায় কালভার্ট নির্মাণ কাজ। কাজ শেষ না করেই ফেলে রাখা হয়েছে ফটিকছড়ি ও রাউজান উপজেলার মধ্যে যোগাযোগ সড়কের সংযোগ সেতুটি। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। উপায় না পেয়ে সেতুর পাশে বিলের উপর কর্দমাক্ত ভাঙা মাটির রাস্তা দিয়ে দিনের পর দিন চলাচল করছে পথচারীরা।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অর্থায়নে তৌকিরহাট–আমিরহাট (মোশাররফ আলী সওদাগর সড়ক) সড়কের ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের আরসিসি বঙ কালভার্ট নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পায় এম এস রনি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এই কালভার্টে নির্মাণ প্রকল্পের কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত এপ্রিলে। তবে এখনো কাজ শেষ হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কালভার্ট নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ফটিকছড়ির ধর্মপুর, আব্দুল্লাহপুর, জাফতনগর এবং রাউজানের উত্তর সর্তা, আমিরহাট যাতায়াতকারী প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। দীর্ঘ পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। বিকল্প মাটির রাস্তায় দিয়ে হেটে পারাপারেও চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। অন্যদিকে, তদারকি না থাকায় সেতুর লোহার রডে এসেছে মরিচা। যেন দেখার কেউ নেই।
ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, গত ৬ মাস আগে ব্রিজ না থাকায় পাশে বিলের রাস্তা দিয়ে একজনের বাইকে করে যাওয়ার সময় সেখানে পড়ে ব্যথা পেয়ে ১ মাস ১৬ দিন ঘরে বসে থাকতে হয়েছে। এভাবে প্রতিদিন কেউ না কেউ সমস্যায় পড়ছে এ ব্রিজের অভাবে। আর কতদিন গেলে এ সমস্যার শেষ হবে?
স্থানীয় মো. বাপ্পা বলেন, আমাদের কষ্টের কোনো শেষ নাই। আমরা আর সহ্য করতে না পেরে সংবাদ সম্মেলন করবো বলেছিলাম, তখন ঠিকাদার আমাদের একমাস সময় দিয়েছে কাজ শেষ করবে। কিন্তু সে সময় গেলেও কাজের কোনো অগ্রগতি নাই। ঠিকাদার কালভার্ট নির্মাণের আগে বিকল্প যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা করেনি। বাধ্য হয়ে আমরা কোনোভাবে চলাচলের ব্যবস্থা করলে পানিতে তাও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুঃখ নিয়ে বাপ্পা বলেন, কয়েকদিন আগে আমার মা অসুস্থ হলে ডাক্তারকে আসতে বললে তিনি আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে। এর সমাধান আমরা দ্রুত চাই।
ধর্মপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির জন্য আমার এলাকার হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কষ্টে আছেন। ঠিকাদার আমাদের ১৫ দিন সময় দিয়েছে কাজ শেষ করার। কিন্তু সময় শেষ হলেও এখনো কোনো খবর নাই। ব্রিজের পাশে কোনোভাবে চলাচলের জন্য বিকল্প সড়কের কিছু কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু তাও এখন নষ্ট হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির জহিরুল ইসলাম বলেন, কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমি এলজিইডি অফিস থেকে অতিরিক্ত সময় চেয়েছি। তারা বলেছে বৃষ্টি শেষ হলে কাজ শেষ করে দেয়ার জন্য।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, চুক্তির যে মেয়াদ ছিল সে সময়ের মধ্যে ঠিকাদার কাজটি শেষ করতে পারেনাই। ঠিকাদারকে ডেকে কথা বলা হয়েছে। তিনি সময় চেয়েছেন। তার মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।