ম্যাচের অনেক আগেই প্যারাগুয়ের মাঠে মেসির জার্সি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল প্যারাগুয়ে কর্তৃপক্ষ। আর কারনেই হয়তো গ্যালারীতে দেখা গেল প্যারাগুয়ের লাল–সাদা স্ট্রাইপের জার্সি। আর্জেন্টিনার জার্সি কিছু ছিল কী না একদমই বোঝা গেল না। মাঠেও যেন একই চিত্র। প্যারাগুয়ের চমৎকার ফুটবলের সামনে খুঁজেই পাওয়া গেল না বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে মেসির দল ভুগল বল দখলে রাখতে। পারেনি পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে। উজ্জীবিত ফুটবলে লিওনেল স্কালোনির দলকে হারিয়ে দিল প্যারাগুয়ে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে শুরুতে এগিয়ে গিয়েও ২–১ ব্যবধানে হেরেছে আর্জেন্টিনা। আসরে এটি তাদের তৃতীয় হার। লাউতারো মার্তিনেসের গোলে এগিয়ে যাওয়া লাতিন আমেরিকার চ্যাম্পিয়নরা ধরে রাখতে পারেনি ব্যবধান। আন্তোনিও সানাব্রিয়া সমতা ফেরানোর পর প্যারাগুয়ে জয় এনে দেন ওমার আলদেরেতে। ঘরের মাঠে অষ্টম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পেয়েছিল প্যারাগুয়ে। কর্নার থেকে শট একটুর জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি দিয়েগো গোমেস। পরের মিনিটে মিগেল আলমিরনের বাইসাইকেল কিক ব্যর্থ হয় নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর মুখে লেগে। একাদশ মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। শুরুতে অফসাইড দেন লাইন্সম্যান। পরে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। এনসো ফের্নান্দেসের থ্রু পাস ধরে লেগে থাকা ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন লাউতারো মার্তিনেস। তেমন কিছু করার ছিল না গোলরক্ষকের। জাতীয় দলের হয়ে টানা দুই ম্যাচে গোল পেলেন ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার। বলিভিয়ার বিপক্ষে ৬–০ ব্যবধানের জয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন তিনি।
১৯ মিনিটে গুস্তাভো গোমেসের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরলেও বিপদমুক্ত করতে পারেনি আর্জেন্টিনা। পরে দিতে হয় এরই মাশুল। বাইলাইনের কাছাকাছি জায়গা থেকে গুস্তাফো ভেলাসকেসের ক্রসে সানাব্রিয়ার দৃষ্টিনন্দন বাইসাইকেল কিক পোস্ট ঘেঁষে জড়ায় জালে। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে পোস্টের নিচে ফেরা এমিলিয়ানো মার্তিনেস। ছয় মিনিট পর নাহুয়েল মোলিনার ক্রসে বল পেয়ে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি লিওনেল মেসি। ৩২ মিনিটে একটুর জন্য আর্জেন্টিনা অধিনায়কের চমৎকার চিপের নাগাল পাননি হুলিয়ান আলভারেস। ১২ মিনিট পর মেসির শট প্যারাগুয়ের এক খেলোয়াড় ঠেকিয়ে দেওয়ার পর ফিরতি বলে দুর্বল শট নিয়ে হতাশ করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এগিয়ে যায় প্যারাগুয়ে। ৪৭ মিনিটে গোমেসের ফ্রি কিকে ছুটে গিয়ে আলদেরেতে ডাইভিং হেডে খুঁজে নেন জাল। পিছিয়ে পড়ার পর যেন খেই হারিয়ে ফেলে আর্জেন্টিনা। ভুগতে থাকে বল দখল রাখতে। আক্রমণাত্মক ফুটবলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের চেপে ধরে প্যারাগুয়ে। ৬৯ মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতেই দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন রদ্রিগো দে পল। তবে গোলরক্ষককে একা পেয়েও অনেক উপর দিয়ে মেরে হতাশ করেন এই মিডফিল্ডার। ৭৯ মিনিটে সমতা প্রায় ফিরিয়েই ফেলেছিলেন মেসি। তার দূরপাল্লার শট একজনের গায়ে লেগে বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। আট মিনিট পর আর্জেন্টিনা অধিনায়কের কর্নারে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি একটু আগে বদলি নামা তাতি কাস্তেয়ানোস। অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম মিনিটে আবার সুযোগ পান তিনি। দে পলের ক্রসে তার হেড বেরিয়ে যায় পোস্টের পাশ দিয়ে। ২০১৬ সালের পর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে প্রথম জয়ের উচ্ছাস নিয়ে মাঠ ছাড়ে প্যারাগুয়ে। সেবার তারা জিতেছিল প্রতিপক্ষের মাঠে। ১১ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে আর্জেন্টিনা।