পেসার ইবাদত ও খালেদে মুগ্ধ কোচ ডোনাল্ড

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ১৩ মে, ২০২২ at ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ

গতিময় বলে একসময় বিশ্ব ক্রিকেটে বিস্ময় সৃষ্টি করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যালান ডোনাল্ড। ছন্দময় রান আপে ছুটে সাবলীল বোলিং অ্যাকশনে আগ্রাসী সব ডেলিভারি বের হত তার হাত থেকে। তার নতুন বলের সফল জুটি ছিলেন শন পোলক, মাখায়া এনটিনি, ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্সের মতো পেসাররা। সেই ডোনাল্ডই বিস্মিত হয়েছেন বাংলাদেশের দুই পেসার ইবাদত হোসেন ও সৈয়দ খালেদ আহমেদকে দেখে। গত মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন ডোনাল্ড। সেখানেই তিনি অনুশীলনে ও ম্যাচে কাছ থেকে দেখতে ও জানতে পারেন বাংলাদেশের পেসারদের। সেখানে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের জয়ে পেসারদের ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। তবে ডোনাল্ডের বিস্ময়-পর্ব টেস্ট সিরিজে। সেখানেই ইবাদত ও খালেদের প্রাণশক্তি ও ফিটনেসে মুগ্ধ হন তিনি। এবার শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের বাংলাদেশ স্কোয়াডেও আছেন এই দুজন। অনুশীলনে তাদের সঙ্গে লম্বা সময় ধরে কাজ করছেন ডোনাল্ড।

গতকাল বৃহস্পতিবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শেষে কথা বলেন ডোনাল্ড। খালেদ ও ইবাদতের প্রসঙ্গে বাংলাদেশের এই পেস বোলিং কোচ বলেন,‘আমার জন্য সবচেয়ে বিস্ময় ছিল ইবাদত ও খালেদ। বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচে। ওদের ‘ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি’ দেখে চমকে গিয়েছিলাম। ‘ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি’ বলতে আমি বোঝাচ্ছি ওদের সাহস ও দৃঢ়তা। নিবেদনের ব্যাপার তো আছেই, সঙ্গে ওদের ফিটনেসও। টেস্ট ম্যাচে দুজন করে পেসার ও স্পিনার আগে কখনোই দেখিনি। তবে ওরা যেভাবে ওই দুই টেস্টে নিজেদের মেলে ধরেছে, বিশেষ করে প্রথম টেস্টে ডারবানে ওরা ছিল অসাধারণ। পুরো বোলিং আক্রমণই ছিল দুর্দান্ত। শেষ ইনিংসের ব্যাটিং ধস আমাদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে, ওই সময়টা ছাড়া ভালোই করছিল দল। দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুটি টেস্টেই অলআউট করতে পারা ছিল দারুণ পারফরম্যান্স। ওদের যতটুক দেখেছি, আমি উচ্ছ্বসিত। প্রতিটি ট্রেনিং সেশনে আমরা যে আলোচনা করেছি এবং যা শেখার চেষ্টা করেছি, সবকিছুই দারুণ গঠনমূলক। আমরা যেভাবে এগোচ্ছি, তাতে আমি খুশি।’

তরুণ বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম এবার শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দলে আছেন। তাকে নিয়েও ডোনাল্ডের মুগ্ধতা অনেক, তবে বিস্মিত হননি শরিফুলকে আগে থেকে জানতেন বলেই। ১ওয়ানডে সিরিজে শরিফুলকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও ওকে দেখেছিলাম। তখনও দুর্দান্ত ছিল। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয়ের ওই আসর থেকেই তার অনেক সম্ভাবনা দেখা হচ্ছিল।’

চোটের কারণে এবার শ্রীলংকা সিরিজে খেলতে পারছেন না তাসকিন আহমেদ। তবে পেস আক্রমণের নেতা হিসেবে তাকে ঠিকই স্মরণ করেছেন ডোনাল্ড। ‘তাসকিন এখন ইনজুরিতে আছে। ওকেও দারুণ পছন্দ করি। ওর হৃদয় সোনা দিয়ে মোড়ানো, বিশাল হৃদয়ের ক্রিকেটার। ও যখন ফিরে আসবে, এই পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দেবে। আরও অনেক বেশি তাড়না দেখা যাবে তখন। যা দেখছি এখনও পর্যন্ত, আমি রোমাঞ্চিত।” চট্টগ্রামে দলের তিন দিনের অনুশীলনে আরেক পেসার রেজাউর রহমানকেও কাছ থেকে দেখতে পেরেছেন পেস বোলিং কোচ। শুরুতে তার বোলিংয়ে অস্বস্তি থাকলেও পরে তিনিও নজর কাড়তে পেরেছেন ডোনাল্ডের। ‘সে খুব ভালো অ্যাথলেট, ছুটতেই থাকে। এই সপ্তাহে বেশ ভালো বল করেছে। সোম ও মঙ্গলবার একটু জড়তা ছিল ওর, তবে আজকে দারুণ সেশন কাটিয়েছে।

ওর প্রাণশক্তি ভালো লেগেছে, যে মাত্রা সে যোগ করেছে, তা ভালো লেগেছে। আরেকটি নতুন বোলারকে দেখা ও তার সামর্থ্য দেখতে পারাটা দারুণ।’
বাংলাদেশের পেসারদের শেখার ও জানার ক্ষুধা ডোনাল্ডকে খুশী করেছে। এই দক্ষিণ আফ্রিকান বললেন, তার নিজ দেশেও শেখানোর ক্ষেত্রে এতটা ভালো অভিজ্ঞতা অনেক সময় হয়নি। ‘এখানে এই ছেলেদের নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত, কারণ তারা সঠিক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে এবং তারা শিখতে চায়। দেশে আমাদের তরুণদের অনেকেই, প্রথম শ্রেণির পর্যায়ের অনেকেই পরিকল্পনা থেকে দ্রুত সরে যায়। এখানে ইবাদত, খালেদ ও শরিফুলকে নিয়ে আমি যা দেখেছি, তারা জানে ও বোঝে নিষ্প্রাণ উইকেটে বোলিং করতে হলে কী করতে হবে। এটা লম্বা সময়ের একটা শেখার প্রক্রিয়া।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধএশিয়ান গেমস হকি বাছাইয়ে গ্রুপ সেরা বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে হেরাথকে পাবে না বাংলাদেশ