মাননীয় সরকার বাহাদুর আপনারা আপাতত রিলিফ সহ সমস্ত সাহায্য সহযোগিতা বন্ধ রেখে, এমনকি টিসিবির পণ্য বিক্রয় রেখে, ২ কোটি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে দিন। অবশ্যই টাকাগুলো দিতে হবে পরিবারের প্রধানের মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে। বাংলাদেশকে ১৪ দিনের জন্য ছুটি দিয়ে দিন। বিশ্বের সকল দেশের সাথে আপাতত ১৪ দিন বিমান যোগাযোগ বন্ধ রাখুন। ১৪ দিনের জন্য ইমারজেন্সি আইন জারি করে দিন। চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজ ছাড়া আর কোনো কাজে জনগণ বের হতে পারবে না। একমাত্র সেবাখাতের লোকজন ছাড়া। অন্যথায় বন্দুকের গুলির ভয় দেখালেও পেটের দায়ে জনগণ বের হবেই হবে। মানুষ প্রাণ হাতে নিয়ে অনেক পেশায় জড়িত। মানুষ যে পেটের দায়ে কি ভয়ানক কাজ করতে পারে কালুরঘাট ব্রীজের উপর উঠে একবার দেখলে হয়। ভরদুপুরে রোদে গভীর পানিতে ডুব মেরে বালি তুলছে প্রাণ হাতে নিয়ে! অথচ সে সন্ধ্যায় এসে ঘরের পুরো বাজার সদায় করতে পারে না।
আমরা বাঁচতে চাই। এভাবে এলোমেলো ভাবে জীবন চলে না। অফিস খোলা, গাড়ি বন্ধ। এটা একধরণের হাত পা বেঁধে সাতরাতে দেওয়ার মতো অবস্থা। অফিস চললেও বেতন ঠিকমতো পাবো কিনা অনিশ্চয়তার মধ্যে ভুগছি। ব্যবসা না হলে কোম্পানি বেতন কোত্থেকে দেবে। আপনারা বড় বড় নেতা, ব্যবসায়ীরা এয়ারকন্ডিশন সমেত বিলাসবহুল বাড়িতে থাকেন,নিজস্ব বিলাসবহুল গাড়িতে চড়েন, সুপার মার্কেট থেকে কর্মচারী বাজার করেন। আপনারা জানেন না বর্তমান বাজারদর। যেহেতু আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের মানুষ, সুতরাং পেছনে থাকানোর আর সময় নেই, এগিয়ে যেতে হবে। আর এগুতে গেলেই আয়ের সাথে ব্যয়ের তুলনামূলক সামঞ্জস্যতা থাকতে হবে। আসলে আমাদের আয়ের সাথে খরচের কোন সামঞ্জস্যতা নেই। প্রতিদিন ব্যক্তিগত ঋণের বোঝা বাড়ছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে ঠিকই, শিক্ষা, চিকিৎসা, আই টি সহ বিভিন্ন সেক্টরে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে, কৃষি খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে দেশ, এতে কোন সন্দেহ নেই। পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে সবকিছুর দাম বাড়ছে এবং ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। ইনকাম কিন্তু সেভাবে বাড়ছে না। সুতরাং লকডাউন দেন আর এমারজেন্সি দেন অসুবিধা নেই কিন্তু মধ্যবিত্ত -নিম্ন মধ্যবিত্ত – নিম্নবিত্ত – অতীব নিম্ন বিত্তের মানুষদের বাস্তব চিত্র জেনে বাস্তব সম্মত সুসিদ্ধান্ত নিন। কথায় আছে “পেটে দিলে পিঠে সয়”। আমরাও চাই করোনাভাইরাস চিরতরে বিনাশ হোক।
মোহাম্মদ শফিউল আলম, বীমা কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম।