পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার একটি দলিল জালিয়াতি মামলায় তিনি আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার দাশ। জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী ও মামলার বাদীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট পেকুয়া উপজেলার শেখেরকিল্লাহঘোনা এলাকার মৃত হাজি আবদুল হাকিমের কন্যা শাকেরা বেগম বাদী হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের ৪ ভাই বোনের নামে একটি জাল দলিল সৃজন করার অভিযোগে একই এলাকার অধিবাসী রমিজ আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। সিআর মামলা নং ৫৯২/২০। আদালত মামলাটি কক্সবাজার সিআইডিতে তদন্তের জন্য পাঠালে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সাইফুল ইসলাম নির্ধারিত সময়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ প্রেক্ষিতে আদালত আসামিকে সমন জারি করলে আসামি আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। পরে জাহাঙ্গীর আলম উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। উচ্চ আদালতের বেধে দেয়া সময় শেষে গতকাল আদালতে হাজির হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
মামলার এজাহার সূত্র ও মামলার বাদী শাকেরা বেগমে জানান, ‘পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম তারা ৪ ভাই-বোনকে দাতা ও নিজেকে গ্রহিতা সাজিয়ে তাদের নামীয় পেকুয়া মৌজার বিএস ৩১৪ খতিয়ানের ১৯০২ দাগ ও বিএস ৩১৫ নং খতিয়ানের ১৯০৮ ও ১৯১১ নং দাগের ২০ শতক জমি একটি জাল দলিল সৃজন করে আত্মসাত করেন। এমনকি ওই দলিল দিয়ে নিজ নামে খতিয়ান সৃজন করে তা অপর ৪ ব্যক্তির কাছে বিক্রিও করে দেন। তিনি আরো জানান, ক্রেতারা আমাদের ওই জমি দখলে নিতে আসলে আমরা বিষয়টি জানতে পেরে আদালতের শরণাপন্ন হই। সর্বশেষ আদালত মামলার একমাত্র আসামিকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন।’
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিগত ১৫-১০-১৯৯৬ ইং সালে পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের ছোটভাই বাপ্পি বিএস- ১৫ নং খতিয়ান থেকে ৪০৮৪ নং দলিলমূলে মামলার বাদী শাকের বেগম ও তার ভাই আবুল কালামের কাছ থেকে ১২ শতক জমি ক্রয় করেন। কিন্তু বিপত্তিটা হচ্ছে ওই একই তারিখ ও একই দলিল নম্বর দিয়ে বাদী শাকেরা বেগমসহ তার বোন আনোয়ারা বেগম, লায়লা বেগম, ভাই আবুল কালামকে দাতা ও নিজেকে গ্রহিতা সাজিয়ে পেকুয়া মৌজার বিএস ৩১৪ খতিয়ানের ১৯০২ দাগ ও বিএস ৩১৫ নং খতিয়ানের ১৯০৮ ও ১৯১১ নং দাগের ২০ শতক জমির একটি জাল দলিল সৃজন করেন জাহাঙ্গীর আলম। এ বিষয়ে শাকেরা বেগম বাদী হয়ে ২০২০ ইং সালে আদালতে সিআর মামলা দায়ের করলে তদন্তে দলিলটি জাল দলিল বিবেচিত হওয়ায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।’