দেড় মাস ধরে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের জেরে বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের বাজার। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা ও পাইকারি উভয় পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তদাররা বলছেন, দেশীয় কৃষকদের বাঁচাতে সরকার গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজের আইপি (আমদানি অনুমতি) বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশের বাজারে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। আমাদের দেশে পেঁয়াজের মৌসুমে ভারতীয়রা পেঁয়াজের দাম কমিয়ে দেয়। ফলে দেশের কৃষকরা লোকসান গুনে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। অনেক সময় ভারত বিনা নোটিশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেয়। এতেও দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম লাগামহীন হয়ে যায়। গতকাল চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫–৫৫ টাকায়। অন্যদিকে সেই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০–৬৫ টাকায়। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়ে কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। বাকি ৪ লাখ টন আমদানি করা হয়। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারে প্রভাব ফেলে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস আজাদীকে বলেন, বাজারে যখন ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ ছিল তখন দাম ছিল ২৬–৩০ টাকা পর্যন্ত। সরকার দেশের কৃষক বাঁচাতে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করার কারণে দেশের পেঁয়াজ চাষিরা এর সুফল পাচ্ছেন। তবে পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
কাজীর দেউড়ি এলাকার খুচরা বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের দোকানে কয়েক ক্যাটাগরির দেশীয় পেঁয়াজ আছে। এর মধ্যে ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০–৬৫ টাকায়। এছাড়া আরেকটি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫০ টাকায়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন আজাদীকে বলেন, ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। বাজারে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। এছাড়া সরবরাহও স্বাভাবিক। তার অভিযোগ, পেঁয়াজের যথেষ্ট উৎপাদন হওয়ার পরও ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধকে অজুহাত বানিয়ে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।