পেঁয়াজ রপ্তানিতে বুকিং দর কমালো ভারত

বাড়ছে সরবরাহ, কমছে দাম

জাহেদুল কবির | মঙ্গলবার , ৭ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে প্রতি টনে বুকিং দর ১০০ ডলার কমিয়েছে। এছাড়া বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। মূলত সরবরাহ বাড়ার কারণে চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ঝাঁজ কমছে পেঁয়াজের। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজে দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত। আড়তদাররা বলছেন, ব্যবসায়ীদের দোকানগুদামে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। তাই দাম নিম্নমুখী।

গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের কয়েকজন আড়তদার জানান, পেঁয়াজের বাজার চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর করে। চাক্তাই খাতুনগঞ্জে গুটিকয়েক ব্যক্তি পেঁয়াজ আমদানি করেন। বাকিরা কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। অর্থাৎ পেঁয়াজ আমদানিকারক যে দাম নির্ধারণ করে দেন, সেই দামে বিক্রি করেন। এর বিনিময়ে কেজি প্রতি তারা নির্ধারিত একটি কমিশন পেয়ে থাকেন। তাই আড়তদারদের পক্ষে দাম উঠানামা করার কেনো সুযোগ নেই। আমাদের দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়লে সিন্ডিকেট কারসাজির অভিযোগ উঠে। আসলে পেঁয়াজের ক্ষেত্রে একদমই ভুয়া বিষয়। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। চাইলেই কেউ বেশিদিন মজুদ করে রাখতে পারে না। এখন যেমন সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমে যাচ্ছে।

জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি(তাহেরপুরী), বারি(রবি মৌসুম), বারি(খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।

চাক্তাইয়ের আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, বাজারে পেঁয়াজের কোনো সংকট নাই। স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ আসার জন্য অনেক ট্রাক অপেক্ষা করছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভারতীয় পেঁয়াজ আসার পরিমাণ বাড়বে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজও পর্যাপ্ত আছে।

চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আহসান খালেদ পারভেজ আজাদীকে বলেন, সরবরাহ বাড়ার কারণে পেঁয়াজের বাজার নিম্নমুখী। এছাড়া ভারত বুকিং দর কমিয়েছে এটিও সামনে প্রভাব পড়বে।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস আজাদীকে বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। দামও কমছে। বাজারে বেচাবিক্রিও কম।

শামসুল ইসলাম নামের এক ভোক্তা বলেন, পেঁয়াজের বাজার পাইকারীতে যখন বাড়ে তখন খুচরা বাজারে সাথে সাথে বেড়ে যায়। অথচ এখন পাইকারীতে কমছে কিন্তু খুচরাতে কমার খবর নাই। অথচ প্রশাসন যদি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতো, তবে শুধু পেঁয়াজ নয় আর কোনো পণ্যের দাম উঠানামা করতে পারতো না।

উল্লেখ্য, গতকাল ভারত তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের রপ্তানি বাড়াতে রপ্তানি মূল্য ১০০ ডলার পর্যন্ত কমিয়েছে। আগে প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৪০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ থাকলেও বর্তমানে তা কমিয়ে ৩০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে ভারত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআগামী মাসে প্রতিষ্ঠিত হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর : নাহিদ
পরবর্তী নিবন্ধঅগ্রাধিকারমূলক কাজের তালিকা দিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ