চট্টগ্রামের চার উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় শিশুসহ আরও ৫ জন আহত হয়েছে। গত শনিবার ও গতকাল রবিবার সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, আনোয়ারা ও চকরিয়ায় পৃথক এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জানান, সীতাকুণ্ডে প্রাইভেট কারের চাপায় আনসার ভিডিপি সোনাইছড়ি ইউনিয়ন কমান্ডার বদিউল আলম (৬০) প্রকাশ বদি সওদাগরের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার বেলা তিনটার সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বার আউলিয়াস্থ ফুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বদি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ফুলতলা গ্রামের মৃত আহম্মদ মিয়ার পুত্র। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বদিউল আলম মহাসড়কের ফুলতলা বাজারে পরিবারের জন্য ইফতার কিনতে যায়। ইফতার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকামুুখী একটি প্রাইভেটকার (চট্টমেট্টো গ-১১-৪৮৬৭) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কমান্ডার বদিউল আলমকে চাপা দেয়। এসময় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার এসআই আবুল হাসনাত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।
হাটহাজারী প্রতিনিধি জানান, হাটহাজারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মো. ইউসুফ চৌধুরী (৬০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় বুড়িশ্চর এলাকার নজু মিয়ারহাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা গ্রামের মৃত আমিনুর রহমান চৌধুরীর ছেলে। নিহত ইউসুফ দীর্ঘদিন ধরে উত্তর বুড়িশ্চর এলাকায় ফতে মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে নজুমিয়ারহাট এলাকায় রাস্তা পাড় হওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেল ইউসুফকে ধাক্কা দেয়। এসময় তিনি আহত হন। উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আনোয়ারা প্রতিনিধি জানান, আনোয়ারায় সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত রিকশার সংঘর্ষে আবদুর রশিদ (৬০) নামের এক ব্যক্তি নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছে। গত শনিবার বিকাল পাঁচটায় উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের পূর্ব কন্যারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুর রশিদ চন্দনাইশ উপজেলার বাইনজুরী গ্রামের বাসিন্দা। আহতরা হলেন, আনোয়ারার পরৈকোড়া তালসারা গ্রামের প্রিয়তোষ মুৎসুদ্দী (৫৫), রিতা মুৎসুদ্দী (৩৮), পটিয়া উপজেলার জালাল উদ্দিন (৫৫), নিহত আবদুর রশিদের শিশুপুত্র আবির (২) ও মোটরসাইকেল আরোহী জাহাঙ্গীর আলম (৪০)। আনোয়ারা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার পটিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশা আনোয়ারা আসার পথে পরৈকোড়া ইউনিয়নের পূর্বকন্যারায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি ব্যাটারি চালিত রিকশার সংঘর্ষ হয়। পরে সিএনজি অটোরিকশাটি একটি মোটরসাইকেলকেও ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজি যাত্রী, পথচারীসহ ৬ জন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে আনোয়ারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আহত আবদুর রশিদের অবস্থার অবনতি হলে তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়। আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পরির্দশন করেছে। এঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।
চকরিয়া প্রতিনিধি জানান, চকরিয়ায় সড়ক নির্মাণ কাজে নিয়োজিত পানিবাহী ট্রাক চাপায় সাইকেল আরোহী মোহাম্মদ সাকিব (১৩) নামে এক কিশোর মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছে। গত শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নির্মাণাধীন বরইতলী-শান্তিবাজার-কাকারা-ইয়াংছা সড়কের কাকারা মাঝেরফাঁড়ি বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কিশোর সাকিব কাকারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনোয়ার আলমের পুত্র। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নির্মাণাধীন বরইতলী-শান্তিবাজার-কাকারা-ইয়াংছা সড়কের মাঝেরফাঁড়ি এলাকায় সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল সাকিব। এ সময় সড়ক নির্মাণকাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আলভী কনস্ট্রাকশনের একটি পানিবাহী ট্রাক সাকিবকে চাপা দেয়। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কাকারার চেয়ারম্যান মো. শওকত ওসমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘সড়কের কাজে নিয়োজিত পানিবাহী ট্রাকের চাপায় ওই কিশোর নিহত হয়।’