পৃথক দুই মামলায় বন্ধকী সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগ আদালতের

ঋণ পরিশোধে অনাগ্রহ, সময়ক্ষেপণ

হাবীবুর রহমান | সোমবার , ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ঋণ নিয়ে পরিশোধে অনাগ্রহ ও সময়ক্ষেপণের দায়ে খেলাপি ঋণ আদায়ের পৃথক দুই মামলার সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগ করেছে আদালত। মামলা দুটির একটি ওয়ান ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার এবং অপরটি ইউনাইটেট কমার্শিয়াল ব্যাংকের দায়ের করা। সাত কোটি ১৩ লাখ টাকা ঋণ আদায়ে হালিশহরের মেসার্স সরোয়ার কামাল চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সরোয়ার কামাল চৌধুরী, তার মা হাসিনা বেগমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অর্থঋণ মামলা করে ইউনাটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক। অন্যদিকে ৪৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা ঋণ আদায়ে দেওয়ানহাটের প্রাইম এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মঈনুল আলম সাইমন, তার স্ত্রী নুরতাসনিয়া, মা সামসুন নাহার বেগমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অর্থঋণ মামলা দায়ের করে ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড আগ্রাবাদ শাখা। গতকাল চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক

মুজাহিদুর রহমান দুই মামলার বন্ধকী সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগের এই আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী সাত কোটি ১৩ লাখ টাকার মামলার বন্ধকী সম্পত্তি দেখভাল করবেন হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ৪৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার বন্ধকী সম্পত্তি বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেখভাল করবেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পৃথক দুই মামলার বাদী ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত বিবাদীদের সংশ্লিষ্ট বন্ধকী সম্পত্তিতে হালিশহর ও বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে রিসিভার নিয়োগ দিয়েছেন। এখন দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পৃথক দুটি বন্ধকী সম্পত্তির ভাড়া তোলাসহ যাবতীয় বিষয়াদি দেখভাল করবেন।

আদালত সূত্র জানায়, ৪৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড আগ্রাবাদ শাখা গত ১৬ মার্চ অর্থঋণ মামলা দায়ের করে। ঋণের বিপরীতে তফশীলোক্ত সম্পত্তি ব্যাংকের নিকট বন্ধক আকারে দায়বদ্ধ রয়েছে। এর মধ্যে গত ২৬ জুলাই বিবাদী আদালতে উপস্থিত হয়ে বলেন, তিনি একজন প্রকৃত ব্যবসায়ী এবং দেশত্যাগ করবেন না। বাদী ব্যাংকের দাবিকৃত ঋণ বিআরপিডি সার্কুলারের আওতায় সুদ মওকুফ সুবিধা গ্রহণপূর্বক পরিশোধ করবেন। সে অনুযায়ী আদালত তাকে গত ২৪ আগস্ট ৫০ লাখ টাকা ডাউন পেমেন্ট জমা দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু বিবাদী পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে ডাউন পেমেন্টের ৫০ লাখ টাকা জমা দেওয়ার জন্য সময়ের আবেদন করেন। সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে গত ৩০ আগস্ট ডাউন পেমেন্ট জমা দেওয়ার জন্য দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু এবারও কোনো টাকা জমা হয়নি। বরং শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে পুনরায় সময়ের আবেদন করেন। যা আদালতের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। এ জন্য আবেদনটি নামঞ্জুর করা হয়। একই সাথে রিসিভার নিয়োগ করতে ব্যাংকের করা আবেদন আমলে নিয়ে ঋণের বিপরীতে থাকা বন্ধকী সম্পত্তিতে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে রিসিভার নিয়োগ করেছেন বিচারক। আদালত সূত্র জানায়, অন্যদিকে সাত কোটি ১৩ লাখ টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ে ২০২০ সালে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের করা মামলায় বারবার তাগাদা দেওয়া সত্বেও ঋণ পরিশোধ করেননি বিবাদীরা। শুধু সময়ের আবেদন করে চলেছেন। যা আদালতের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় এবং ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারক হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে রিসিভার নিয়োগ দিয়েছেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৬৯() ধারায় বন্ধকী সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগ আইনগতভাবে অনুমোদন রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৪৪ টাকা বাড়ল
পরবর্তী নিবন্ধবর্জ্য নিয়ে মানুষ সচেতন হলে জলাবদ্ধতা রোধ করা সম্ভব : মেয়র