পূর্বসূরীদের পথ ধরে হ্যান্ডবলকে এগিয়ে নিতে চান বিপ্লব-কল্লোল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ৫ জুলাই, ২০২৪ at ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামেতো বটেই সারাদেশে হ্যান্ডবল বেশ প্রতিশ্রুতিশীল একটি ইভেন্ট। জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই ইভেন্টে চট্টগ্রামের হ্যান্ডবল খেলোয়াড়রা আলো ছড়িয়েছে। আর চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থায় এই হ্যান্ডবল বেশ চলমান একটি ইভেন্ট। গত কয় বছর ধরে এই ইভেন্টটি নিয়মিতই নানা টুর্নামেন্ট বা লিগ আয়োজন করে আসছে। যদিও বেশ কয়েক বছর ধরে জাতীয় পর্যায়ে তেমন ভাল করতে পারছেনা চট্টগ্রাম জেলা দল। বলতে গেলে গত কয় বছরে তেমন মান সম্মত হ্যান্ডবল খেলোয়াড়ও উঠে আসেনি। তবে সে সব এখন অতীত। আর অতীতকে পেছনে ফেলে নতুন করেই যেন শুরু করতে চান এবারে হ্যান্ডবল কমিটিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া হাসান মুরাদ বিপ্লব এবং সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া কল্লোল দাশ। আগামী চার বছরের জন্য এ দুজন দায়িত্ব পেয়েছেন। দুজনেই প্রথমবারের কোন এরকম একটি চলমান ইভেন্টে সভাপতি এবং সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন। তাই দুজনই একই কন্ঠে বললেন আগের যেসব লিগ বা টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হতো সে সব চালু রাখবেন তার পাশাপাশি নতুন কিছু করারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। যেখানে দু জনেরই পরিকল্পনা স্কুল টুর্নামেন্ট করা। যেহেতু খেলোয়াড় তুলে আনতে হলে স্কুল পর্যায়টা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। ইতোপূর্বে চট্টগ্রামে স্কুল পর্যায়ের কোন ণিগ বা টুর্নামেন্ট হয়নি হ্যান্ডবলে। বালক এবং বালিকা দুই বিভাগেই এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চান বি্প্ল‌ব এবং কল্লোল।

সম্পা্‌দক কল্লোলের দৃষ্টিটা আরো একটু বিস্তৃত। তিনি উপজেলা পর্যায়েও কিছু একটা করতে চান। যেহেতু গ্রাম গঞ্জ থেকেও অনেক মেধাবী খেলোয়াড় তুলে আনা সম্ভব। তবে তার আগে তাদের পরিকল্পনায় নিয়মিত যে সব লিগ হয় সেগুলো আয়োজন করা। যেখানে রয়েছে তিন স্তরের লিগ। প্রিমিয়ার ডিভিশন, প্রথম বিভাগ এবং দ্বিতীয় বিভাগ। তবে দুজনেই গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রশিক্ষণের ওপর। তবে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে প্রশিক্ষণের বুলিটা একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। কর্মকর্তারা একটি কথা একেবারে সহজেই বলে ফেলেন, তা হচ্ছে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খেলোয়াড় তুলে আনা হবে। কিন্তু বাস্তবে সে সব প্রশিক্ষণ আর আলোর মুখ দেখেনা। আর দেখলেও সেটা কেবলই আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই থেকে যায়। তবে হাসান মুরাদ বিপ্লব সে ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চান। যদিও একটি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতে গেলে সবচাইতে বেশি যে জিনিসটা দরকার তা হচ্ছে অর্থ। তবে তাদের পক্ষে প্রশিক্ষন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা কঠিন বলে মনে করেন না বিপ্লব। যেহেতু এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে এখন খেলোয়াড় রাখার মত বেশ সুযোগ রয়েছে। সেগুলোকে একটু উন্নত করতে পারলেই হয়ে যাবে। তাই আগামী চার বছরে অন্তত একটি ভাল প্রশিক্ষণ কর্মসুচি করতে চান হ্যান্ডবল কমিটির নতুন চেয়ারম্যান। নিজে হ্যান্ডবল খেলোয়াড় ছিলেন কল্লোল। খেলেছেন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তাছাড়া গত তিন মেয়াদে জেলা ক্রীড়া সংস্থার হ্যান্ডবল কমিটির যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। স্থানীয় এবং জাতীয় যেকোন আয়োজনে তার রয়েছে দক্ষ ভুমিকা। তবে নিজের অভিজ্ঞতাকে এবার ভালভাবেই কাজে লাগাতে চান কল্লোল। নিজের একটি স্বপ্নের কথাও জানিয়েছেন কল্লোল। আর সেটি হচ্ছে হ্যান্ডবলে কর্পোরেট লীগ চালু করা। দায়িত্বপালনকালীন এই লীগ চালুর মাধ্যমে হ্যান্ডবলের পেশাদারিত্ব যুগের সূচনা করতে চান তরুণ এই সংগঠক। খেলা পরিচালনার জন্য অত্যন্ত জরুরী অঙ্গ হচ্ছে রেফারি। যদিও চট্টগ্রামে বেশ ভাল অনেক রেফারী রয়েছে। যারা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে আসছে। তারপরও তরুণ মেধাবীদের কোচিং ও রেফারিং এ যুক্ত করার জন্য সেমিনার আয়োজনেরও পরিকল্পনা রয়েছে তার। জাতীয় পর্যায়ে দলের কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ দল নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করার অভিজ্ঞতা রয়েছে কল্লোলের। তাই এই হ্যান্ডবলের অনেক কিছুই তার নখদর্পণে। তাই নিজের সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রামের হ্যান্ডবলের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান কল্লোল।

যেকোন ইভেন্টে ভাল ফলাফল করতে হলে দলের বছর ব্যাপি অনুশীলনের বিকল্প নেই। চট্টগ্রামে দেখা যায় খেলা নেই খেলোয়াড়ও নেই। ফলে জাতীয় পর্যায়ে দল পাঠাতে গেলে তখন সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় । তাই জেলা দল এবং যুব দলে যারা থাকবে তাদেরকে অফ সিজনেও কিভাবে অনুশীলনে রাখা যায় সে চেষ্টাও করতে চান কল্লোল। এদিকে হাসান মুরাদ বিপ্লব জানিয়েছেন অতীতে যারা হ্যান্ডবলের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্যে যেমন সৈয়দ আবুল বশর, আসলাম মোরশেদ, ওয়াহিদ দুলালদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া হবে যাতে চলার পথে কোন ধরনের বাধার সৃষ্টি হয়। কমিটিতে রয়েছে বেশ কিছু তরুণ এবং সাবেক খেলোয়াড়। টেকনিক্যাল লোকজনও রয়েছেন। কাজেই জনপ্রিয় এই ইভেন্টটি চালাতে তেমন সমস্যা হবেনা বলেও মনে করছেন বিপ্লব এবং কল্লোল। সময়ের সাথে এখন খেলাধুলার ধরনেও আসছে নানা পরিবর্তন। আইন কানুনে প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন নতুন কিছু। কাজেই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগুতে হবে বলেও মনে করছেন এই দুজন।

এরই মধ্যে হাসান মুরাদ বিপ্লবকে চেয়ারম্যান আর কল্লোল দাশকে সম্পাদক করে গঠিত হ্যান্ডবল কমিটিতে সহ সভাপতি রাখা হয়েছে আসলাম মোরশেদ, জহুরুল ইসলাম, মোরশেদ আলম চৌধুরী তাজু, হাসান মুন্না এবং আতাউল্লাহ চৌধুরীকে। যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন হারুন অর রশিদ, জাবেদা বেগম মিতুল এবং হায়দার আলিকে। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন আবদুর রশিদ লোকমান, তাসনুভা হায়দার, সোহেল আহমেদ, আবু কায়সার, গিয়াস উদ্দিন বাবর, ধীমান বড়ুয়া. রনি দত্ত, সোহেল হোসেন এবং রাশেদ রেজা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা পেলেন ভারতীয় দল
পরবর্তী নিবন্ধঅভিনয় ছাড়ছেন দীপিকা!