ইরানের পার্লামেন্ট বলেছে, পূর্বশর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফের পরমাণু আলোচনা শুরু করা তেহরানের উচিত হবে না। গতকাল বুধবার শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তাদের এ বিবৃতি এসেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইরানকে ধোঁকা দিতে ও জায়নবাদী শাসকদের (ইসরায়েল) আকস্মিক হামলাকে আড়াল করতে যুক্তরাষ্ট্র যখন আলোচনাকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে, তখন আগের মতো আলোচনা হওয়া উচিত নয়।
সুনির্দিষ্ট পূর্বশর্ত ঠিক করতে হবে এবং সেসব পুরোপুরি পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো নতুন আলোচনা হতে পারে না, বিবৃতিতে বলেছে ইরানের পার্লামেন্ট। খবর বিডিনিউজের।
বিবৃতিতে পূর্বশর্ত নিয়ে বিস্তারিত বলা না হলেও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন, ইরানের ওপর আর হামলা হবে না–এমন নিশ্চয়তা না দিলে তারা আলোচনায় রাজি হবেন না। তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে–এমন দাবি করে গত মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। তেহরান শুরু থেকেই বারবার বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির উদ্দেশ্যই হচ্ছে বেসামরিক উন্নয়ন, অস্ত্র বানানো নয়। ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের গত মাসের ১২ দিনের আকাশ যুদ্ধের আগে ওমানের মধ্যস্থতায় তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ৫ দফা পরোক্ষ আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ঘরোয়া ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধের দাবি তুললে ওই আলোচনা কার্যত থমকে যায়।
তেহরানের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে দিনকয়েক আগেই আরাগচি বলেছেন, তারা এমন কোনো পরমাণু চুক্তিতে রাজি হবেন না যেখানে তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সুযোগ থাকবে না। পরমাণু কর্মসূচির বাইরে কোনো কিছু নিয়ে আলোচনা হলে সেখানেও তারা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির মতো কিছু নিয়ে কথা বলবেন না। এদিকে মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তাড়া নেই তার, কারণ তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তবে তিন ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ওয়াশিংটনও একটি চুক্তির জন্য অগাস্ট পর্যন্ত ইরানকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে।