পুলিশ ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ সিইসির

নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে ইসির মতবিনিময়

| বুধবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে কাজ করবেন না; পেশাদারত্বের সাথে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। আজকে খুব অসম্ভব রকমভাবে আমার বুকের জোর বেড়েছে আপনাদের কথাবার্তা শুনে। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে মতবিনিময় ও ব্রিফিংয়ে একগুচ্ছ নির্দেশনা দেন সিইসি। চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সচিব ও বিভাগের প্রতিনিধি, আইজিপি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, রিটার্নিং অফিসার ও জেলাপ্রশাসক, এসপি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। খবর বিডিনিউজের।

নির্বাচন ভবনে সকালে এ মতবিনিময় সভা শুরু হয়, বেলা ২টার পরে সমাপনী বক্তব্য দেন সিইসি। সকালে স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, মাঠ কর্মকর্তারা ভালো কাজ না করলে ইসির ঘুম হারাম হবে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা মতবিনিময় করে আশ্বস্ত হওয়ার কথা জানিয়ে সমাপনী ভাষণে তিনি বুকের জোর বেড়ে যাওয়ার কথা বললেন। নাসির উদ্দিন বলেন, আপনারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। আমি আশ্বস্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, যে উদ্দেশ্যে আজকে এখানে একত্রিত হয়েছি, সে উদ্দেশ্য আমরা ডেলিভার করতে পারব।

৬৪ জন জেলা প্রশাসক, ৬৪ জন এসপি। আটজন বিভাগীয় কমিশনার, আট জন ডিআইজি, ৬৪ জন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, ১০ জন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিলিয়ে মোট ২২৬ জন এদিন সভায় অংশ নেন।

মতবিনিময়ের সমাপনী ভাষণে সিইসি বলেন, দুজন ব্যক্তি আমাদের কাছে ভিভিআইপি; যদি কোনো আইন থাকত, আমি ভিভিআইপি ঘোষণা করতাম এই মুহূর্তে। একজন রিটার্নিং অফিসার, আরেকজন প্রিজাইডিং অফিসার।

ইসির সব সার্কুলার, পরিচালনা বিধিসহ সব আইনবিধি, নির্দেশনা রিটার্নিং অফিসারকে ভালোভাবে পড়ে নেওয়ার পাশাপাশি প্রিজাইডিং অফিসারদের গাইড করার নির্দেশনা দেন তিনি। আচরণবিধি প্রতিপালন, জরিমানা ও প্রতিটি অ্যাকশন এর বিষয়ে সচনেতা বাড়াতে গণমাধ্যমের সঙ্গে ভালো সমন্বয় করে ব্যাপক প্রচার চালানোর ওপর জোর দেন সিইসি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই যে এখন সক্রিয়, সে বিষয়টি তুলে ধরে যে কোনো ধরনের অপতথ্য, মিথ্যা তথ্য ও গুজব রোধের পাশাপাশি ভালো উদ্যোগের প্রচারে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সবার সহযোগিতা চান তিনি।

ভোটের মৌসুমে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তা রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার কিংবা নির্বাচনি তদন্ত কমিটির কাছে জানানোর নিয়ম। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ আসা শুরু করেছে বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত কমপ্লেইন আমাদের এখানে চলে আসছে। মানুষ জানে না যে কমপ্লেইনটা রিটার্নিং অফিসারের কাছে করতে হয়। ইলেকশন কমিশন বিকাম কমপ্লেইন লজিং সেন্টার। কেউ যদি ভায়োলেশন করে, কোনো ক্যান্ডিডেট যদি সমস্যা করে, কোথায় কমপ্লেইন করবেকার কাছে করবে? তাকে জানাতে হবে? মানুষকে জানতে হবে।

সেজন্য রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের অফিসের সামনে নাম ও ফোন নম্বর দৃষ্টিগোচর হয় এমন রাখার ব্যবস্থা করতে বলেন সিইসি। তিনি বলেন, কারো অভিযোগ থাকলে, আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ থাকলে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যদি হ্যারাস করে, দয়া করে এই নম্বরে অমুকের কাছে কমপ্লেইন করবেনএটা আপনার অফিসের সামনে ঝুলিয়ে দিতে হবে।

সম্প্রতি ময়মনসিংহে একজনকে পুড়িয়ে মারা ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সমপ্রীতি বজায় রাখা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশনা দেন সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন। প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কমিউনাল হারমনি মাস্ট বি মেনটেইন। এটা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের মধ্যে রাখতে হবে। আর বয়স্ক, ফিজিক্যালি ডিজঅ্যাবল যারা আছেন, তারা যেন কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারে এই ব্যবস্থাটা করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদাদির কোলে ছবি দিয়ে জাইমার দেশে ফেরার বার্তা, রাজনীতিতে আসার ইঙ্গিত
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬