বাংলাদেশে বিরোধীদলের সমাবেশে পুলিশের ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ ঘটনা ঘটলে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশন।
সমপ্রতি বিরোধী দলের সমাবেশ ঘিরে সহিংসতার কথা কথা তুলে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স শুক্রবার জেনিভায় এক ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানান। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যখন জরুরি হয়ে পড়ে, কেবল তখনই যেন তারা বলপ্রয়োগের পথে যায়। আর যদি সেটা করতেই হয়, আইন ও নীতি মেনে, সংযম ও যৌক্তিকভাবে তা করতে হবে। অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ হলে সেটাকে অবশ্যই তদন্ত করে দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’ জেরেমি লরেন্সের ওই বক্তব্য জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের দপ্তরের ওয়েবসাইটে ব্রিফিং নোট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতির এই সময়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভূক্তিমূলক ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব রাজনৈতিক দল, তাদের সমর্থক ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশন।
গত কয়েক মাসে বিরোধীদের সমাবেশ ঘিরে বারবার সংঘাত হওয়ার কথা তুলে ধরে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, সেখানে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদুনে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে। প্রতিবাদকারীদের মারধরের জন্য পুলিশ ও তাদের সঙ্গে সাদাপোশাকে থাকা ব্যক্তিদের হাতুড়ি, লাঠি, ব্যাট এবং লোহার রডের মত বস্তু ব্যবহার করতে দেখা গেছে। বিরোধী দলের সমর্থকদের পাশাপাশি কিছু পুলিশ সদস্যও সহিংসতায় আহত হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের প্রকাশ্য দিবালোকে মারধর করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে তাদের বাড়িঘরে অভিযান চালিয়েছে সাদা পোশাকধারীরা। সমাবেশের আগে–পরে শত শত বিরোধী নেতা ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জেরেমি লরেন্স বলেন, কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই মানবাধিকার বিষয়ে তাদের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে। জনগণকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মত প্রকাশের অধিকার চর্চার সুযোগ দেওয়ার পাশাপপাশি এসব অধিকার চর্চার ক্ষেত্র সঙ্কুচিত করতে যে কোনো তৃতীয়পক্ষের চেষ্টা থেকে জনগণকে সুরক্ষা দিতে হবে।
নির্বাচন ঘিরে যারা ভোটের প্রচার চালাচ্ছে, তাদের জন্য একটি ‘নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ’ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মুখপাত্র, যে পরিবেশে রাজনৈতিক বৈচিত্র্য এবং ভিন্ন মত প্রকাশের অধিকারকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখা হবে এবং মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বাধীনভাবে চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হবে।