পুরোপুরি অনলাইন সেবার আওতায় আসেনি চট্টগ্রাম এলএ শাখা

হয়রানি কমছে না ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৯:০১ পূর্বাহ্ণ

গত একবছরেও পুরোপুরি অনলাইন সেবার আওতায় আসেনি চট্টগ্রাম এলএ (ভূমি অধিগ্রহণ) শাখা। সেবা নিতে আসা লোকজনদের জন্য স্থাপিত হেল্প ডেস্কও নিষ্ক্রিয়। দালালদের খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন সময় ভূমি মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। হয়রানি কমছে না ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে ভূমি মালিকদের ক্ষতিপূরণের আবেদন, আপত্তি থেকে শুরু করে পেমেন্টের সব হালনাগাদ তথ্য অনলাইনে নেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। এলএ শাখা নিয়ে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর যে কেউ অনুসন্ধান বক্সে ক্লিক করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সব ধরনের তথ্য পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া সিটিজেন চার্টার বক্সে ক্লিক করে বিভিন্ন সেবার ধরন, সেবা প্রাপ্তির প্রক্রিয়া, ফি, অভিযোগ দেয়া ও পরার্মশ নেয়াহ বিভিন্ন সুবিধা চালু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর অনলাইনে নেয়ার প্রক্রিয়া চালু শুরু হলেও এখনও ভূমি অধিগ্রহণ ব্যবস্থা পুরোপুরি অনলাইনে আনা যায়নি। এলএ শাখার কার্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে দালালদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত রয়ে গেছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীরা দালালদের পাশাপাশি সরাসরি সার্ভেয়ার, কানুনগোসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে যোগাযোগ করতে দেখা যায়। এভাবে প্রতিদিনই বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের ভিড় লেগেই আছে এলএ শাখায়। এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.আবু হাসান সিদ্দিক আজাদীকে বলেন, বর্তমানে এলএ শাখায় আগের তুলনায় অনেক স্বচ্ছতা ফিরে এসেছে। ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য আবেদন থেকে শুরু করে পেমেন্টের সব তথ্য এখন অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।
বর্তমানে বেশিরভাগই দালাল সরাসরি এলএ শাখায় না গিয়ে বিভিন্ন প্রতিনিধির মাধ্যমে ফাইল নিয়ে এলএ শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগ করে থাকে। টাকা উত্তোলনের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা থেকে ১০ শতাংশ থেকে বিশেষ ক্ষেত্রে বিশ শতাংশ টাকা দাবি করা হচ্ছে ভূমি মালিকদের কাছে। অন্যথায় ফাইল আটকে যায়। কোনো সময় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে পুরো টাকাটাই আত্মসাৎ করছে চক্রটি। সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন ভূমি মালিক ফৌজদারি মামলাসহ ডিসি অফিসে একাধিক অভিযোগ করেছেন। গত ৪ নভেম্বর এলএ শাখায় ভূয়া স্বাক্ষর ও কাগজপত্র সৃজন করে ভূয়া আপত্তি উত্থাপনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন চেষ্টার অভিযোগে কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যার চারজনের বিরুদ্ধে মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন মিরসরাই এলাকার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম চৌধুরী। মামলাটি আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত করছে। মিরসরাই মধ্যম মগাদিয়া গ্রামের হতদরিদ্র নাছির উদ্দিনের ক্ষতিপূরণের ৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। গত ১০ নভেম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা মৌজার অধিগ্রহণকৃত একটি জায়গার জাল দলিল ও নামজারী খতিয়ান সৃজন করে ভূয়া মালিক সেজে অন্যের অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭২ লাখ টাকা তুলে আত্মসাতের ঘটনায় মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউৎকোচ নেয়া বন্ধ করুন
পরবর্তী নিবন্ধযেভাবে নতুন বই হাতে পাবে শিক্ষার্থীরা