২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের একটি ঘটনা দেশের ক্রিকেটকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, জাতীয় দলের স্পিনার নাসুম আহমেদকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেছিলেন সে সময়ের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সেই ঘটনা ছাড়াও অন্য কিছু কারণে সমপ্রতি হাথুরুকে বরখাস্ত করেছে বিসিবি। ব্যাগ গুছিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন শ্রীলঙ্কান কোচ। এর কিছুদিন পরে জাতীয় দলে ফিরেছেন নাসুম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সুযোগ পেয়ে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। বিশেষ করে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে, যেখানে তার বোলিং ঝলকে সিরিজের একমাত্র জয়টি তুলে নেয় বাংলাদেশ। এতদিন পরে জাতীয় দলে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন নাসুম। এখন আর সেই ঘটনা স্মরণ করতে চান না তিনি। এ নিয়ে গতকাল তিনি বলেন, খোলামেলা বলি, আমি ওই ঘটনা নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না। গত এক বছরে এ নিয়ে আমি কাউকেই কিছু বলিনি। আমি সবকিছু আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছিলাম এবং তিনি আমাকে এক বছর পর আমার আগের জায়গা (জাতীয় দলে) ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি এখন এটা ধরে রাখতে চাই এবং এজন্য আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব। সেই ঘটনা এখন অতীত। সারা দেশ জানে কি হয়েছে এবং এরপর থেকে আমি তা নিয়ে একটি কথাও বলিনি। আর বলবোও না। ঘটনাটি নিয়ে নাসুম চুপ করে থাকলেও, এটা নিশ্চিত যে ওই সময়টুকু তার ওপর মানসিক চাপের কারণ হয়েছিল। নাসুম জানিয়েছে, ওই সময় এমনকি নিজের ঠিকানাও বদলাতে হয়েছে তাকে। কারণ বাইরে বের হলেই নানান অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো তাকে। তার নিজের আলাক্র লোকজনই তার দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছিল। ক্যারিয়ারের ‘অন্ধকার সময়‘ নিয়ে অবশ্য খুব বেশি ভাবতে চান না নাসুম। তিনি বলেন, যা কিছু হয়েছে তা নিয়ে যদি ভাবি, ওটা বড় ইস্যু ছিল। এটা সত্য যে, আমাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু এরপর যখন সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পথে তখন আমি প্রিমিয়ার লিগ খেলছি এবং চার ম্যাচে আমি কোনো উইকেট পাইনি। এর পরের ১২ ম্যাচে পেয়েছিলাম ২৪ উইকেট। যার মধ্যে একটি ফাইফারও আছে। তাই আমি কিছুদিনের মধ্যেই নিজের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পেয়েছি এবং ঘরোয়া টুর্নামেন্টে পারফর্ম করতে শুরু করেছি। নাসুম নিজেকে সাকিবের বিকল্প হিসেবে দেখছেন না। এখনই নিজের নামের পাশে অলরাউন্ডার শব্দটি যোগ করার যে চাপ, তা নাসুম নিতে চান না। তিনি বলেন, ওভাবে সাকিবের বিকল্প হিসেবে ভাবলে কিছুই অর্জন করতে পারব না। সাকিব তো সাকিবই এবং আমি মনে করি, অন্য কেউ সাকিব হতে পারবে না। তিনি নেই বলে আমার রাস্তা পরিষ্কার, এমনটা মনে করি না। আমি পারফর্ম না করলে জোর করে তো দলে ঢুকতে পারব না। ‘আমি যদি সাকিবের জায়গা নিতে চাই, তাহলে আমাকে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে দ্বিগুণ চাপ নিতে হবে। আমি ব্যাটিং করতে পারি। সেটা প্রমাণ করতে পেরে আমি খুশি। কিন্তু তারচেয়েও বড় কথা আমি মূলত একজন বাঁহাতি স্পিনার এবং আমি যদি ব্যাট করতে পারি, সেটা দলের কাজে লাগবে। সবাই আমাকে বোলার হিসেবেই দেখে এবং আমি যদি বল ভালো করতে না পারি, তাহলে আমি দুটি ফিফটি হাঁকালেও দলে থাকতে পারব না। আমার মূল পরিচয় আমি বোলার। এটা নিয়ে ভুল ভাবার সুযোগ নেই।