কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত কর্ণফুলী পেপার মিলে পুরাতন কাগজ দিয়ে উন্নত মানের নতুন কাগজ তৈরি করা হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে কেপিএম এই প্রক্রিয়ায় কাগজ তৈরি করছে বলে জানা গেছে। পুরাতন কাগজ ব্যবহার করে নতুন যে কাগজ উৎপন্ন করা হচ্ছে তা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও পাঠ্য পুস্তক ছাপানোসহ অন্যান্য যাবতীয় কাজেও এই কাগজ ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ্ গতকাল রোববার পুরাতন কাগজ ব্যবহার করে নতুন কাগজ উৎপাদনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে পুরাতন কাগজ ব্যবহার করে নতুন কাগজ বানানোর কাজ করছে কেপিএম। পুরাতন কাগজকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় মণ্ড বানিয়ে সাদা, সবুজ, হলুদ, বাদামীসহ সব রঙের কাগজ উৎপন্ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঠিকাদারের মাধ্যমে পুরাতন কাগজ সংগ্রহ করে কেপিএম কারখানায় নিয়ে আসা হয়। সেই কাগজ বাছাই করে পিন বা কোনো প্লাস্টিক জাতীয় কিছু থাকলে তা বাছাই করে অপসারণ করা হয়। পরে সেই পুরাতন কাগজকেই মণ্ড বানানো হয়। জানা গেছে, ২০১৭ সালের আগে কর্ণফুলী পেপার মিলে বাঁশ ও নরম কাঠ দিয়ে মণ্ড তৈরি করে সেই মণ্ড থেকে কাগজ উৎপন্ন করা হতো। কিন্তু ১৭ সালের পর বিভিন্ন কারণে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে দিয়ে মণ্ড তৈরির প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই কেপিএম পুরাতন কাগজ অধিক মাত্রায় ব্যবহার করে উন্নতমানের কাগজ উৎপাদনের দিকে মনোনিবেশ করে। তবে পূর্বে যখন বাঁশ কাঠ ব্যবহার করে কাগজ উৎপন্ন করা হতো তখন বাঁশ কাঠের পাশাপাশি বিদেশী মণ্ড দিয়েও কাগজ উৎপাদন করা হতো। কাগজ উৎপাদনে বর্তমানে বাঁশ কাঠের প্রচলন না থাকলেও কাগজ তৈরিতে বিদেশী পাল্প বা মণ্ড এখনো ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে বিদেশী পাল্প বা মণ্ড আমদানিতে যে খরচ পড়ে তার চেয়ে অনেক কমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুরাতন কাগজ সংগ্রহ করা হয়। বর্তমানে বিদেশী পাল্পের পাশাপাশি পুরাতন কাগজ ব্যবহার করে সব ধরনের কাগজ উৎপাদন করা হচ্ছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, কেপিএমের মেশিন হাউজে নীল রঙের কাগজ উৎপাদন করা হচ্ছে। এই কাগজ নির্বাচন কমিশনকে সরবরাহ করার জন্য তৈরি করা হচ্ছে বলে দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান। ওই কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন কমিশন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য ৯১৫ মে. টন কাগজের চাহিদা পত্র দিয়েছিল। ইতোমধ্যে ৫৩৭ মে. টন কাগজ নির্বাচন কমিশনকে সরবরাহ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৩৭৮ মে. টন কাগজ আগামী ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলেও তিনি জানান।
কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহীদ উল্ল্যাহ্ বলেন, নির্বাচন কমিশন ছাড়াও বিএসও আরো এক হাজার মে. টন কাগজের চাহিদা দিয়ে রেখেছে। চাহিদা অনুযায়ী সব কাগজ যথা সময়ের মধ্যে সরবরাহ দিতে সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তারা অনবরত কাজ করছেন। কাগজ উৎপাদনের জন্য কেপিএমের গুদামে বর্তমানে কাঁচা মালের কোনো সঙ্কট নেই বলেও তিনি জানান।












