পুরনো ঠিকানায় মানসিক রোগ বিভাগ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২১ at ৮:১৮ পূর্বাহ্ণ

অবশেষে পুরনো ঠিকানায় ফিরেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগ। হাসপাতালের নিচ তলায় (ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের পার্শ্ববর্তী) ৩ নম্বর ওয়ার্ড এ বিভাগের পুরনো ঠিকানা। তবে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় হাসপাতালের নিচতলায় আলাদা করে করোনা ইউনিট স্থাপন করা হলে অন্য কয়েকটি বিভাগের সাথে মানসিক বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রমও সীমিত হয়ে যায়। বিভাগটির চিকিৎসা কার্যক্রম নতুন ভবনের ৫ তলায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই এতদিন এ বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছিল। তবে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ ও রোগী কমে যাওয়ায় করোনা ইউনিটের শয্যা সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। মানসিক রোগ বিভাগের স্থলে স্থাপন করা করোনা ব্লকটি গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। করোনা ব্লক গুটিয়ে ফেলার পর সর্বশেষ গত সপ্তাহে মানসিক রোগ বিভাগ নিজের পুরনো ঠিকানায় (হাসপাতালের নিচ তলায়) ফিরেছে। সেখানে আগের মতোই পুনরায় চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছে বিভাগটি।
এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর আজাদীকে বলেন, করোনা রোগী যেহেতু কমেছে, সেহেতু করোনা ইউনিটের রেড জোন ও ইয়েলো জোনের পরিধি আমরা কমিয়ে ফেলছি। সর্বশেষ মানসিক রোগ বিভাগও তাদের পুরনো জায়গায় ফিরেছে। করোনার কারণে বিভাগটি একটু অসুবিধায় পড়লেও এখন থেকে আর সমস্যা থাকছে না। এর আগে চারতলার নাক-কান-গলা বিভাগও তাদের পুরনো জায়গায় চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছে বলেও জানান হাসপাতাল পরিচালক।
প্রসঙ্গত, চমেক হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগে (নিচ তলার পুরনো ঠিকানায়) ৬০ শয্যায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে নতুন (আউটডোর) ভবনের ৫ তলায় এ বিভাগের কার্যক্রম স্থানান্তর করা হলে শয্যা সংখ্যা কমে যায়। ৬০ শয্যার স্থলে রোগী ভর্তির সুযোগ ছিল ২০টিরও কম শয্যায়। এতে করে করোনা পরিস্থিতিতে বিভাগটির চিকিৎসা সুবিধা কিছুটা হলেও সংকুচিত হয়ে যায়।
তবে পুরনো ঠিকানা ফিরে পাওয়ায় সাময়িক সংকট দূর হয়েছে জানিয়ে মানসিক রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগের প্রধান ডা. পঞ্চানন আচার্য আজাদীকে বলেন, এখন আর তেমন সমস্যা নেই। আমরা পুনরায় ৬০ শয্যায় রোগী ভর্তি করছি। এর মাঝে পুরুষের জন্য ৩৫ শয্যা এবং শিশুদের জন্য তিনটি শয্যা রয়েছে। বাকি ২২টি শয্যা রয়েছে নারী রোগীদের জন্য। দিন দিন রোগী বাড়লেও বিভাগে চিকিৎসক সংকট প্রকট বলে জানালেন তিনি।
মানসিক রোগ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে (এক বছরে) বিভাগের আউটডোরে প্রায় ১১ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আর ইনডোরে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে তিনশ রোগী। চিকিৎসা সেবা নেয়াদের মধ্যে সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত রোগী সবচেয়ে বেশি। মোট রোগীর ৩৫ শতাংশ। এরপরই মেজাজ সংক্রান্ত ডিজ-অর্ডার জটিলতায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বেশি। যা মোট রোগীর ৩০ শতাংশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভাগে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও আছেন মাত্র একজন। সহকারী অধ্যাপক পদের ওই চিকিৎসক বর্তমানে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে আছেন। যদিও ওয়ার্ডে একজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও আউটডোরে আরো একজন চিকিৎসক রয়েছেন। তবে তারা দুজনই অন্য বিভাগের। চিকিৎসক সংকটের কারণে এই (মনোরোগ) বিভাগে তাদের পদায়ন করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শনাক্তের হার ০.৬৫ শতাংশ
পরবর্তী নিবন্ধধর্মীয় সম্প্রীতিতে বাংলাদেশ নাম্বার ওয়ান : পররাষ্ট্রমন্ত্রী