আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মুসলিম রেন্জারের বাড়ির একটি পুকুর ঘাটে গত বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় পুলিশের অভিযানে বন্দুক, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম জব্দ ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এসময় আব্দুল মজিদ (৪২) নামে এক অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আনোয়ারা থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত জব্দ তালিকার মধ্যে রয়েছে ১টি বিদেশী ( তুর্কিমিনিস্তান)এলজি, ১টি কাঠের বাটযুক্ত দেশীয় তৈরি এলজি, ৮ রাউন্ড কার্তুজ, অস্ত্র তৈরির ছোট–বড় যন্ত্রাংশ ১১টি, অস্ত্র রাখার ১টি স্টিলের বঙ, ১টি স্মার্ট ফোন, অস্ত্র ক্রয় বিক্রির নগদ ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা রয়েছে। আব্দুল মজিদ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় একটি দুষ্কৃতকারী সিন্ডিকেটের সহায়তায় এই ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে বলে পুলিশকে জানায়। তিনি স্থানীয় মৃত মুসলিম আহমদ চৌধুরীর পুত্র। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী এই চক্রের সাথে জড়িত স্থানীয় সিন্ডিকেটের গডফাদারদের গ্রেপ্তার দাবি করেছে।
পুলিশ জানায়, সাধারণত সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনার নিরাপত্তার কাজে। কিন্তু অভিনব কায়দায় সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করে অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনা এবং নিজ মোবাইলে অস্ত্র ব্যবসার ভিডিও ধারণ করে রাখার ঘটনাটি অনেকটা দুঃসাহসী, ব্যতিক্রম।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টায় উপজেলার বরুমচড়ায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ পুকুরে ঘাটের নিচ থেকে ১টি দেশীয় এলজি, ১টি তুর্কির তৈরি একনলা বন্দুক, ৮ রাউন্ড কার্তুজ, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ও নগদ ৩ লাখ ৬৫হাজার টাকা উদ্ধার করে। এসময় সিসি ক্যামেরা ও ফুটেজ জব্দ করা হয়। তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তার আবদুল মজিদ স্থানীয় একটি বিশেষ চক্রের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে নিজবাড়িতে বসে সিসিক্যামেরা লাগিয়ে এবং নিজ মোবাইলে অবৈধ এ ব্যবসা পরিচালনা করতেন। অস্ত্র ব্যবসা, গুলি চালানোসহ বিভিন্ন ফুটেজ রয়েছে তার জব্দকৃত মোবাইলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তাছাড়া এ ব্যবসায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে আনোয়ারা থানায় মামলা হয়েছে।
এদিকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গতকাল দুপুর একটায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল আহমদ, আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন, থানার এসআই জুয়েল মিয়া প্রমুখ।