পুকুরটি ভরাটে আবার নতুন আয়োজন, নানা কৌশল

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩ নভেম্বর, ২০২২ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

পুকুর ও জলাশয় ভরাট আইন লঙ্ঘন করে নগরীর আগ্রাবাদের রংগীপাড়ায় শতবর্ষী একটি পুকুর ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। ইতোপূর্বে পুকুরটির ভরাট কার্যক্রম ঠেকাতে পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়েছিল। ওই সময় আটক করা হয়েছিল কয়েকজনকে। কিন্তু মাত্র মাস কয়েকের মাথায় সব আয়োজন আবারো নতুন করে শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে পরিদর্শন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংগীপাড়ার জলকলোনী এলাকার শতবর্ষী কাদেরের পুকুর নামে পরিচিত বালির বাপের পুকুরটি গত বেশ কিছুদিন যাবত ভরাট করার কার্যক্রম চলছে। প্রায় চল্লিশ গন্ডা (প্রায় আড়াই বিঘা) আয়তনের পুকুরটি নানা কৌশলে ভরাট করা হচ্ছে। উত্তরের পাড়ের সাথে পুকুরের বেশ কিছু অংশ ভরাট করে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। দক্ষিণ পাড়ের সাথেও বেশ কিছু অংশ ভরাট করে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। যাতে পরবর্তীতে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। খুবই সুকৌশলে পুকুর ভরাটের কার্যক্রম চলে আসছে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, মাস কয়েক আগে বেশ জোরেশোরে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছিল। ওই সময় স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়। এতে কিছুদিনের জন্য পুকুর ভরাট বন্ধ থাকে। সম্প্রতি আবারো জোরেশোরে পুকুরটি ভরাট শুরু হয়েছে। গত কিছুদিন ধরে পশ্চিম পাড় লাগোয়া অংশে ভরাট কার্যক্রম চলছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে ভরাট করা হচ্ছে। প্রায় আড়াই বিঘা আয়তনের পুকুরটির চল্লিশ ভাগেরও বেশি অংশ ইতোমধ্যে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। বাকি অংশটুকুও এমনভাবে পতিত করে রাখা হয়েছে যে তা আর জলাশয় নেই। কচুরিপানায় ভরে আছে। একসময় পানিতে টইটম্বুর করা পুকুরটিকে একেবারে শেষ করে দেয়া হয়েছে মন্তব্য করে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বছর খানেক আগেও স্থানীয় বাসিন্দারা নানাকাজে পুকুরটি ব্যবহার করতো। কিন্তু গত এক বছর ধরে চারপাশ এমনভাবে ঘেরা দেয়া হয়েছে যে এখন আর স্থানীয়রা পুকুরটির ধারে-কাছে ঘেঁষতেও পারে না। একসময় অগ্নিনির্বাপণসহ বিভিন্ন প্রাত্যহিক কাজে স্থানীয়দের বড় অবলম্বন হয়ে থাকা শতবর্ষী পুকুরটি এখন আর ব্যবহার করার উপায় নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পুকুরটি আমাদের না হলেও আমরা নিজেদের মনে করতাম। এটি অনেক বড় একটি স্বস্তির উৎস ছিল। কিন্তু ভরাট করে ফেলার যে সর্বনাশা কার্যক্রম চলছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানের পরও শহরের প্রাণকেন্দ্রে কী করে এত বড় একটি পুকুর নিঃশেষ করে দেয়া হচ্ছে তা নিয়েও স্থানীয়রা প্রশ্ন তোলেন। বিষয়টি নিয়ে গতকাল পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরবর্তীতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের কেউ অভিযোগ করেনি। আজ আমরা সরজমিনে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভূমি অধিগ্রহণের অতিরিক্ত মঞ্জুরির টাকা প্রদানের মেয়াদ একমাস বাড়ল
পরবর্তী নিবন্ধনৌকার প্রার্থী ইছমাইলের হ্যাটট্রিক জয়