পুকুরে মাছ চাষের ঘোষণায় লোকসানি কোম্পানিকে মুনাফায় ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে শেয়ারদর বাড়ানোর প্রমাণ পেয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হামি ইন্ডাস্ট্রিজের (সাবেক ইমাম বাটন) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম হাসিব হাসানকে এক কোটি টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন– বিএসইসি।
২০২১ সালের মে থেকে গত বছরের নভেম্বরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১০ গুণেরও বেশি বাড়ানোর ঘটনায় তদন্ত শেষে গতকাল বুধবার কমিশনের ৯২১তম সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
এতে বলা হয়, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ইমাম বাটন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনে কারসাজির কারণে এএসএম হাসিব হাসান কর্তৃক সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করায় এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
ঢাকা স্টক এঙচেঞ্জ, ডিএসইতে বিবিধ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইমাম বাটন লিমিটেড নাম বদলে ‘হামি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ হয় চলতি বছরের গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে। ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের বোতাম তৈরির প্রতিষ্ঠানটির মৎস্য খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা জানাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। সবশেষ গত জুন মাসে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার চান্দগাঁও মোহাম্মদপুরে সাড়ে ২৫ বিঘা জমির পুকুর লিজ নেয়ার ঘোষণা দেয় ডিএসইতে। বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকা ভাড়ায় চুক্তি করার কথা জানিয়ে কোম্পানিটি বলেছিল, বছর শেষে হামি ইন্ডাস্ট্রিজের রাজস্ব ৫ কোটি টাকা বাড়বে, যার মধ্যে মুনাফায় যোগ হবে এক কোটি টাকা। চুক্তি হওয়ার পরে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেল ঘটনাস্থলে গিয়ে মাছ চাষের কোনো প্রমাণ পায়নি। পুকুর শুকনো ছিল। ২০২১ সালের মে মাসেও কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২০ টাকার কমে। এরপর ব্যবসা সম্প্রসারণের গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর শেয়ারদর গত নভেম্বরের শেষে ২২০ টাকায় উঠে যায়। গতকাল বুধবার জরিমানার সিদ্ধান্ত আসার দিন হামি ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর স্থির হয়েছে ১০৪ টাকা ৩০ পয়সায়।
১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির লভ্যাংশ বিতরণ সংক্রান্ত কোনো তথ্যই নেই ঢাকা স্টক এঙচেঞ্জের ওয়েবসাইটে। গত অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৯৭ পয়সা। এমন একটি কোম্পানির শেয়ারদরের এমন উত্থানে কারসাজির সন্দেহ ছিল শুরু থেকেই। তারই প্রমাণ পেল বিএসইসি।
আরো ৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা : সাধারণ বীমা খাতের কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কারসাজির সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা, একই অভিযোগে ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারী শাহারা জামান ও আশফাকুজ্জামানকে আড়াই লাখ টাকা করে জরিমানা করার কথাও জানিয়েছে বিএসইসি। আর এম লুৎফুল গণি টিটু, মাহমুদুল হাসান, বেনজু খাদো ভাণ্ডার এর স্বত্বাধিকারী খাইরুল হাসান বেনজু, লুৎফুন্নাহার বেগম ও আকিকুন্নাহারকে জরিমানা করা হয়েছে এক লাখ টাকা করে। তবে তারা কীভাবে শেয়ারদরে কারসাজি করেছিলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি।