পুঁজিবাজারের উন্নয়নে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণের সুপারিশ

সিএসই’র প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩ জুন, ২০২৪ at ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ

আগামী ২০২৪২৫ অর্থবছরের বাজেট কাঠামোতে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণের সুপারিশ করেছে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। গতকাল দুপুরে সিএসই’র কনফারেন্স হলে আয়োজিত প্রাকবাজেট সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিএসই’র চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের জনসংখ্যার তুলনায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা খুবই কম। যা গত কয়েক বছর ধরে নিম্নমুখী ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারের প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য লভ্যাংশের উপর দ্বৈত কর প্রত্যাহার করা জরুরি। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মূলধনী লাভের ওপর কর প্রত্যাহার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ইটিএফ ইত্যাদি কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমে কর রেয়াতি সুবিধা বৃদ্ধিকরণ এবং মূলধনী লাভের উপর কর কর্তন করা হলে তা চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচনা করতে হবে। স্টক এক্সচেঞ্জসমূহের দ্রুততার সাথে পণ্য বৈচিত্রকরণের সুবিধার্থে সদ্য প্রচলিত অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড এবং স্মল ক্যাপ বোর্ডে তালিকাভুক্ত উৎসাহিত করে লক্ষ্যে প্রথম ২৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতি প্রদান করা যেতে পারে। কমোডিটি এবং ইকুইটি ডেরিভেটিভ সহজভাবে চালুর জন্য বিনিয়োগকৃত হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের ওপর সকল ধরনের কর প্রত্যাহারের ঘোষণা প্রদান এবং সহজভাবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কমোডিটি এক্সচেঞ্জকে পাঁচ বছরের জন্য কর অব্যাহতি প্রদান করতে হবে। এছাড়া ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি করতে হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধি করা, তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার হ্রাস করা, মূলধনী লাভকে কর অব্যাহতি প্রদান এবং লভ্যাংশ আয়কে করমুক্ত করার মাধ্যমে

বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।

সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, দেশের করপোরেট ফিন্যান্সিংটা ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। এর ফলে কিছু মিসম্যাচ দেখা যাচ্ছে। যদি ক্যাপিটাল মার্কেটকে একটা টেকসই অবকাঠামো দিতে না পারি, তাহলে ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা সেটা কমানো সম্ভব হবে না। আর সেখান থেকে সরে আসতে গেলে একটি শক্তিশালী বাজার কাঠামো দরকার। আর শক্তিশালী বাজার কাঠামো করতে গেলে ক্যাপিটাল মার্কেটের যে উইংগুলো আছে সেগুলো শক্তিশালী করতে হবে। ক্যাপিটাল মার্কেটের একটা যুৎসই সমপ্রসারণ দরকার। আর সেই সমপ্রসারণের জন্য যে কৌশল সেটা বাজেট কাঠামোর মধ্যে নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ইকুইটি মার্কেট নির্ভর বাজার হওয়ায় বাজারে যেমন অনাকাঙ্খিত অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে, তেমনি এটি পুঁজিবাজার সমপ্রসারণের অন্তরায়। এই লক্ষ্যে কার্যকর কৌশলের মাধ্যমে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতি সমসাময়িক কান্ট্রিগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মার্কেট ক্যাপ জিডিপি রেশিও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্থানীয় এবং বিদেশী বিনিয়োগে উৎসাহিত করার একটি প্যারামিটার হিসেবে বিবেচিত হবে।

সিএসই পরিচালক মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) এমদাদুল ইসলাম বলেন, দেশীয় ও বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ব্লু বন্ড ও গ্রিন বন্ডের বিনিয়োগের সম্ভাবনা বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। আমাদের দেশের অর্থনীতিটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাংক নির্ভর হয়ে পড়েছে। এজন্য ব্যাংকের লিকুইডিটি কমে গেছে। অথচ পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ি পোর্ট, এলএনজি টার্মিনাল, এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়েসহ সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পগুলোর অর্থায়নের জন্য যদি সরকার ক্যাপিটাল মার্কেট নির্ভর হতো, তাহলে আমরা টাকা যোগান দিতাম। টোল থেকে বা রেভিনিউ থেকে প্রফিট নিয়ে বিনিয়োগকারীদের দিতে পারতাম। এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরাও নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারতো। সংবাদ সম্মেলনে এসময় সিএসই পরিচালক নকিব উদ্দিন খান, আক্তার পারভেজ হিরু এবং কোম্পানি সেক্রেটারি রাজিব সাহা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক নোবেল জয়ীর বিরুদ্ধে আরেক নোবেল জয়ীর মামলার নজির নেই : ইউনূস
পরবর্তী নিবন্ধমেরিটাইম সংক্রান্ত হংকং রেজুলেশন দ্রুত কার্যকর করার আহ্বান