ছেলেবেলা থেকেই মেধাবী পি কে হালদারের অর্থ লোপাটের ঘটনায় ‘হতভম্ব’ তার স্কুল জীবনের শিক্ষক, স্বজনসহ গ্রামের প্রতিবেশীরা। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার অজপাড়াগাঁ দীঘিরজান গ্রাম থেকেই উঠে আসা পি কে (প্রশান্ত কুমার) হালদারের পরিবারের কেউ আর এখন সেখানে থাকেন না। ২০ বছর আগেই গ্রামের পাট চুকিয়ে মা ও তিন ভাই ভারতে চলে যান। জমি-জিরাত না থাকলেও ভিটেটুকু এখনও আছে। খবর বিডিনিউজের।
দীঘিরজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল শুরু পি কে হালদারের; সেই স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন তার মা লীলাবতী হালদারও। আর বাবা প্রণবেন্দু হালদারের দর্জির দোকান ছিল গ্রামেরই বাজারে। তাদের তিন সন্তান।
পি কে দীঘিরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাসের পর চলে আসেন বাগেরহাটের পি সি কলেজে। পরে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে।
দীঘিরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্য মজুমদার বলেন, ওরা তিন ভাই আমার ছাত্র ছিল। ছোটবেলা থেকেই দেখছি। ওদের তিন ভাই, প্রত্যেকে তুখোড় মেধাবী। প্রশান্তর অর্থ লোপাটের ঘটনায় আমি হতভম্ব। ওকে যখন দেখতাম তখন কখনও ভাবিনি যে, সে ভবিষ্যতে এগুলো করবে।
সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় দেশের আর্থিক খাতে ২০২০ সালে আলোচনায় আসে পি কে হালদারের নাম। তারপরই তিনি বিদেশে পালিয়ে যান। সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাকে গ্রেপ্তারের পর আবারও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
গতকাল দীঘিরজান গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পি কে হালদারের পৈত্রিক ভিটেতে গাছগাছালির মধ্যে বসতঘরের মেঝের দেয়ালটি এখনও টিকে আছে। তবে ওপরে কোনো কাঠামো নেই। উঠানজুড়ে কেবল আগাছা আর শেওলায় ভরা। পেছনের দিকে থাকা টিনের রান্নাঘরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। বোঝাই যায়, অনেক দিন সেখানে মানুষের পদচারণা পড়েনি।
পি কে হালদারের মেজ ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন এবং ছোট ভাই প্রাণেশ কুমার হালদার ভারতে আছেন। দেশ ছাড়ার পর তারা আর কোনোদিন সেখানে আসেননি। গ্রামে এখনও পি কে হালদারের চাচাত ভাই তপন হালদার বসবাস করেন; আছেন আরও কয়েকজন নিকটাত্মীয়।