পিরিয়ড বন্ধ করার প্রবণতা ও এর প্রভাব

| শনিবার , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৩:৫১ অপরাহ্ণ

নারীর শারীরিক স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ হলো মাসিক ঋতুচক্র বা পিরিয়ড। অনেক নারী এই সময়ে তীব্র যন্ত্রণা, পেটব্যথা, মাথাব্যথা, মেজাজ পরিবর্তন ও শারীরিক দুর্বলতায় ভোগেন। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের কারণে এখন হরমোনাল ওষুধ বা কন্ট্রাসেপ্টিভ ব্যবহার করে সাময়িকভাবে মাসিক বন্ধ রাখা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে কর্মব্যস্ত জীবন, ভ্রমণ বা গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে অনেক নারী মাসিক বিলম্বিত বা বন্ধ করতে চান। তবে এই চর্চার পেছনে সুবিধা থাকলেও, এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন থেকে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিতভাবে মাসিক বন্ধ রাখা শরীরের প্রাকৃতিক হরমোন ভারসাম্যে প্রভাব ফেলে। এতে অনিয়মিত রক্তক্ষরণ, ওজন বৃদ্ধি, মুড সুইং, হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া এমনকি ভবিষ্যতে প্রজনন সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে। কিছু ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধা, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এছাড়া, নিয়মিত পিরিয়ড বন্ধ থাকলে নারীরা তাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের কোনো সমস্যা (যেমন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা গাইনোকোলজিক ক্যান্সার) প্রাথমিকভাবে বুঝতে ব্যর্থ হতে পারেন।

অন্যদিকে, কিছু চিকিৎসক যুক্তি দেন যে, সঠিক পরামর্শে এবং সীমিত সময়ের জন্য মাসিক বন্ধ রাখা তেমন ক্ষতিকর নয়। যেমনএন্ডোমেট্রিওসিস বা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের রোগীদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা কখনো কখনো এ চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করতে বলেন। তবে এটি সর্বজনীন সমাধান নয় এবং প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা ভিন্ন। মাসিক নারীর শরীরের প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়া। সাময়িক প্রয়োজনে এটি বন্ধ রাখা যেতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এমন সিদ্ধান্ত শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কেবল সুবিধার জন্য মাসিক বন্ধ করা উচিত নয়। বরং মাসিকজনিত যন্ত্রণা কমাতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তানের ভূমিকম্পে নারীর প্রতি সহায়তা
পরবর্তী নিবন্ধহয়রানিরোধে যেসব সতর্কতা