কক্সবাজার–০৪ (উখিয়া–টেকনাফ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে নিজের বাবা দাবি করে দায়ের করা মামলার বাদী যুবক মোহাম্মদ ইসহাক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিন বছর আগে দায়ের করা মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বদির স্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার চৌধুরী। তিনি দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মোহাম্মদ ইসহাক মনোনয়নপত্রটি জমা দিয়েছেন।
গত ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ার ২৭ বছর বয়সী যুবক মোহাম্মদ ইসহাক কক্সবাজার–০৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে নিজের বাবা দাবি করে টেকনাফের সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বদি ছাড়াও মূল–বিবাদী করা হয়েছে বদির আপন চাচা টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলামকে। মামলাটি আদালতে এখনো বিচারাধীন রয়েছে।
বাদী মোহাম্মদ ইসহাকের অভিযোগ, তার বাবা একজন সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। তার সৎ মা শাহীন আক্তার চৌধুরী বর্তমান সংসদ সদস্য। তাদের প্রভাবে মামলাটি দীর্ঘসূত্রিতায় পড়েছে।
মনোনয়নপত্র জমাদানকালে মোহাম্মদ ইসহাক সাংবাদিকদের বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচনে জয়–পরাজয় তার কাছে মূখ্য নয়, পিতৃত্বের স্বীকৃতি আদায়ের অংশ হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এবারের নির্বাচন তার কাছে পিতৃত্বের স্বীকৃতির সেন্টিমেন্টাল আন্দোলনেরই অংশ। এছাড়া নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণার মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করানো যে, তিনি সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিরই সন্তান। তিনি জোর দাবি করে বলেন, মামলা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এগোলে তিনি পিতৃত্বের স্বীকৃতি পাবেন। এছাড়া আদালতের আদেশে যদি তার ও বাবা বদির ডিএনএ টেস্ট করা হয় তাহলে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হবে।
গত ৩০ বছর আগে টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ ধুমপাড়ার বাসিন্দা আবুল বশরের মেয়ে সুফিয়া খাতুনকে সাবেক সংসদ সদস্য বদি গোপনে বিয়ে করেন। বাদী তার মায়ের পেটে আসার খবর জানতে পেরে তাকে পেটে থাকতে হত্যার চেষ্টা চালান বদি। তাতে সফল না হয়ে সুফিয়াকে স্থানীয় এক রাজ মিস্ত্রীর সাথে বিয়ে দেয়া হয়। এসময় সুফিয়ার পেটে বাচ্চা থাকার কথা গোপন রাখা হয়। পরে জানতে পেরে সেই স্বামী সব মেনে নিয়ে সংসার করেন। এরপরও বাচ্চাসহ সুফিয়াকে হত্যার চেষ্টা করতো বদির পরিবার। এজন্য তারা প্রায় সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিয়ে জীবন ধারণ করেন। এসব বিষয় উল্লেখ করে সুফিয়া সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। তাদের দাবি ইসহাক বদির সন্তান, তাকে যেন মেনে নিয়ে সন্তানের মর্যাদা দেয়া হয়। বাদী ও তার মায়ের দাবি অনুসারে আব্দুর রহমান বদির প্রথম সন্তান ইসহাক। তার অবয়ব, আচরণ সবকিছু বদির অবিকল কপি বলে উল্লেখ করেছেন ওয়াকিবহাল মহল।