মীরসরাইয়ে নাচে–গানে, পিঠা–পুলির আয়োজনের মধ্য দিয়ে ধান কাটা উৎসব শুরু হয়েছে। এতে প্রায় দুইশ কৃষক–কৃষাণী অংশগ্রহণ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ১১ নম্বর মঘাদিয়া ইউনিয়নের মিয়াপাড়ায় জমিতে পাকা আমন ধান কাটার মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি পুত্র মাহবুব রহমান রুহেল। মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাস্টারের উদ্যোগে উৎসবে কৃষক ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উৎসবে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় দুইশ কৃষক গায়ে সাদা গেঞ্জি, পরনে লুঙ্গি, মাথায় গামছা ও হাতে কাঁচি নিয়ে ধান কাটার জন্য সড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছেন। প্রধান অতিথি উদ্বোধন করার পর একসাথে সবাই এক একর আমন ধান কাটেন। এরপর এক রঙের নতুন শাড়ি পরা শতাধিক কৃষাণীর কেউ চিতল, কেউ পুলি, নকশি, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটাসহ হরেক রকমের পিঠা নিয়ে উপস্থিত হন মাঠে। জমির চারপাশে একতারা ও বাদ্যযন্ত্র হাতে নেচে নেচে গান গাইছেন একদল শিল্পী। এ যেন ফিরে এলো গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্য।
উৎসবে উপস্থিত কৃষক নুরুল মোস্তফা ও স্বপন চন্দ্র নাথ বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন এমন উৎসব দেখেছি। এটি এখন হারিয়ে গেছে। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পর আবার ধান কাটা উৎসবে একত্রিত হলাম। সবাই মিলে ধান কাটলাম। অনেক ভালো লাগছে।
উৎসবের উদ্যোক্তা মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, আমাদের গ্রামেও শহরের যান্ত্রিকতা চলে আসছে। হারিয়ে গেছে গ্রাম–বাংলার অনেক ঐতিহ্য। হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্যকে ফিরে পেতে আমাদের এই আয়োজন।
ধানকাটা শেষে মঘাদিয়া নুরুল আবছার চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, আমি ছোট বেলায় দেখেছি আমার দাদারা ধান কাটা নিয়ে অনেক আনন্দ করতো। এখন তা হারিয়ে গেছে। মঘাদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমন চমৎকার আয়োজন করা জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াছমিন শাহিন কাকলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহিনুল কাদের চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুল গনি, আরিফ মাঈনুদ্দীন, তোফায়েল উল্ল্যাহ চৌধুরী নাজমুল, তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মাসুদ, নুরুল আবছার লিটন, কৃষক খোন্দকার হারুন। আলোচনা সভা শেষে ধান কাটায় চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।