পাহাড়ে শুরু হলো বৈসাবি উৎসব

রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ১২ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

পাহাড়ে শুরু হল বৈসাবি উৎসব। তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ে বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের প্রাণের উৎসব ‘বৈসাবি’। চাকমাদের ভাষায় এ উৎসবকে বিঝু, ত্রিপুরাদের ভাষায় বৈসুক এবং মারমাদের ভাষায় সাংগ্রাই এবং তংচঙ্গ্যাদের ভাষায় বিসু এবং অহমিয়াদের ভাষায় বিহু নামে আখ্যায়িত করা হয়। তিন সমপ্রদায়ের প্রাণের এই উৎসবের নামের আদ্যক্ষর নিয়েই তাই এই উৎসবকে বলা হয় ‘বৈসাবি’ উৎসব।

এই বৈসাবী ঘিরে তিনদিন পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। পাহাড়িরা মহা সমারোহে পালন করে তাদের সবচেয়ে বড় এই সামাজিক উৎসবকে।

বৈসাবী উপলক্ষে রাঙমাটিতে গত ১০ এপ্রিল প্রথম প্রহরে বিজু, সাংগ্রাই, বিষু, বিহু উদযাপন কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় র‌্যালি। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় রাজবাড়ী ঘাটে ও সকাল সাড়ে ৭টায় শহরের ত্রিপুরা পল্লী খ্যাত গর্জনতলীতে ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানো অনুষ্ঠান হবে। ১৫ এপ্রিল বৈসাবী উপলক্ষে মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থার (মাসস) উদ্যোগে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহারিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত হবে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী জল উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, নানা আয়োজনে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাদের বর্ষবরণ করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের উদ্যোগে বিজু সাংগ্রাই ও বৈসু উদযাপনে আয়োজন করা র‌্যালি। র‌্যালির উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। শোভাযাত্রায় চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য প্রদর্শন করা হয়েছে বলে জানান খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের বৈসাবি উদযাপন কমিটির সদস্য ও মারমা ভাষার কবি চিংলামং চৌধুরী।

বৈসাবি শোভাযাত্রার মাধ্যমে পাহাড়ের বসবাসরত মানুষের মাঝে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে জানান খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও বৈসাবি উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব টিটন খীসা। তিনি জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় এই সামাজিক উৎসব মানুষের মাঝে ঐক্যের বন্ধন আরো সুদৃঢ় করবে। এর মধ্য দিয়ে পাহাড়ের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রতিবছরই এই বর্ণিল শোভাযাত্রা আয়োজন করে। শোভাযাত্রা শেষে আয়োজন করা হয় এতিহ্যবাহী ডিসপ্লে। ডিসপ্লেতে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ড. গোলাম মহিউদ্দিন, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, জেলা পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিটি নির্বাচনে বিএনপির ঘোমটা পরা প্রার্থী থাকবে : কাদের
পরবর্তী নিবন্ধমোস্তাফিজের ফেরার দিনেও হারল দিল্লি