পাহাড়ে শান্তির পূর্ণ প্রতিষ্ঠায় এখনো কিছু মৌলিক শর্ত বাস্তবায়ন বাকি রয়েছে। চুক্তির মূল দিকগুলো বাস্তবায়ন ও ভূমি সমস্যার সমাধানকে অগ্রাধিকার দিয়ে আগামীদিনের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে মন্তব্য করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি। গতকাল শনিবার রাঙামাটি জেলা শহরের পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড রেস্টহাউস হলরুমে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির সভায় এ কথা বলেন কমিটির সদস্যরা। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কমিটি অবিলম্বে কার্যক্রম শুরু করবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার মাধ্যমে চুক্তির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ এ সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা), টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য গৌতম কুমার চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কংকন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ–সচিব মোঙ্গল চন্দ্র পাল ও উপ–সচিব সামছুল হক।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি, চুক্তির বিভিন্ন ধারা পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আলোচনা সভায়। এসময় কমিটির সদস্যরা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার চুক্তির বাস্তবায়নের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং ইতোমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি পুনর্গঠনের মাধ্যমে কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আজকের সভায় চুক্তির আওতায় ভূমি সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা পরিবীক্ষণ কমিটির দশম সভায় বলেন, এই সভা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে যে, যদি সকল পক্ষ সম্মিলিতভাবে চুক্তির বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করে তাহলে পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও উন্নয়ন সম্ভব। কমিটি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সুপারিশ প্রদান করবে এবং প্রয়োজনে সাব–কমিটি গঠন করে কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবে।
শেষে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বেশ কিছু সমস্যা আছে, যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। সমস্যা আছে বলেই দীর্ঘ সময়ে চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। ভূমি কমিশনসহ অনেক বিষয় নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ছোট–ছোট যেসব বিষয় দ্রুত সমাধান করা যায় তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এ সরকারের সময়ে এটিই প্রথম সভা।