পাহাড়ে বেড়েছে মিশ্র ফলের চাষ

মধুমাসের ফলে সয়লাব বান্দরবান, ভালো দামে খুশি চাষিরাও

বান্দরবান প্রতিনিধি | সোমবার , ২৭ জুন, ২০২২ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

পাহাড়ে জুম চাষের পরিবর্তে বেড়েছে মিশ্র ফলের চাষ। মধুমাস নামে পরিচিত জ্যৈষ্ঠের আম, কাঁঠাল, আনারস, ড্রাগন ফলসহ হরেক রকমের ফলে বান্দরবানে ছেয়ে গেছে স্থানীয় হাটবাজারগুলো। মধুমাসের তাজা ফলের গন্ধ ছড়াচ্ছে পাহাড়ের পথে প্রান্তরে। ভালো ফলনে চাহিদামত দাম পাওয়ায় খুশী চাষিরাও।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, বান্দরবান জেলায় গতবছর মিশ্র ফলের আবাদ হয়েছিল ৩৮ হাজার ৮৯৭ হেক্টর জমিতে। আর ফলের উৎপাদন হয়েছিল ৮ লাখ ১৪ হাজার ৩৮৯ মেট্টিকটন। যা চলতি বছর বেড়ে ফলের আবাদ হয়েছে ৫০ হাজার ৪৮৭ হেক্টর জমিতে। ফলের উৎপাদনও ভালো হয়েছে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দশ লাখ মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলায় ৫৪ প্রজাতির বিভিন্ন জাতের ফলের চাষ এবং উৎপাদন হচ্ছে। তারমধ্যে মধুমাস নামে পরিচিত জ্যৈষ্ঠের ফল আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, ড্রাগন ফলের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। তবে জেলায় মিশ্র ফলের আবাদ এবং উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হচ্ছে রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি এবং সদর উপজেলায়।

স্থানীয় ফলচাষি সাথোয়াই অং মারমা এবং হ্লাচিংনু মারমা বলেন, জুম চাষ আগেরমত লাভজনক নয়। পরিশ্রমের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় পাহাড়ে জুম চাষের পরিবর্তে এখন মিশ্র ফল চাষে ঝুঁকছে পাহাড়ের চাষিরা। পাহাড়ের কেমিক্যালবিহীন, তাজা সুস্বাদু ফলের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। স্থানীয় হাটবাজারগুলো এবং পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফলজ বাগানগুলো থেকেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মৌসুম ফল কিনে পরিবহন করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এ বছর ফলের ভালো ফলন হয়েছে। বিক্রিতে ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।

পাইকারি ফল ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ ছাত্তার বলেন, পাহাড়ে বিশুদ্ধ বাতাসে ভাসছে রস টসটসে ভরপুর ফলের সুগন্ধ। এ বছর জ্যৈষ্ঠের আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, ড্রাগন ফলের ভালো হয়েছে জেলায়। স্থানীয় হাটবাজারগুলো ছেয়ে গেছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠের সুস্বাদু ফলে। ফলের বাম্পার ফলনে চাহিদামত ভালো দাম পাওয়ার খুশী ফল চাষীরাও। এখানে উৎপাদিত ফল কিনে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি আমরাও লাভবান হতে পারছি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে বাণিজ্যিকভাবে ৫৪ প্রজাতির ফলের আবাদ এবং উৎপাদন হচ্ছে। পাহাড়ে উৎপাদিত কীটনাশক মুক্ত সুস্বাদু পুষ্টিকর ফলের কদরও রয়েছে বাজারে। মধুমাসের ফলে ছেয়েগেছে স্থানীয় হাটবাজার। স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে এখানের উৎপাদিত ফল রপ্তানি হচ্ছে জেলার বাইরে এবং বিদেশেও। তাই অলাভজনক জুম চাষের পরিবর্তে মিশ্র ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছে চাষিরা। ফলের চাহিদা থাকায় বাজারে বিক্রি করে লাভবানও হচ্ছে ফল চাষিরা। একটা সময় ফল চাষের জন্য বিখ্যাত একটি জেলা হিসেবেও পরিচিতি পাবে বান্দরবান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় বন্যহাতির আক্রমণে কৃষকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান