দুই যুগ আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশকারী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) পাহাড়ে হানাহানি বন্ধে দিয়েছে নতুন চুক্তির প্রস্তাব। সরকারের কাছে পেশের জন্য মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে এই লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। প্রস্তাবে বর্তমান শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণের দাবি করা হয়েছে। প্রয়োজনে পাহাড়ের সব পক্ষকে নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসতেও অনাপত্তি জানানো হয়েছে। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রক্তপাত বন্ধে চেষ্টা করছেন জানালেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এখনই ইউপিডিএফের এই প্রস্তাবের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। খবর বিডিনিউজের
পাহাড়ে বিদ্রোহ আর রক্তক্ষয় অবসানে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) এর সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) নেতৃত্বাধীন জেএসএসের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ ছিল পাহাড়িরা। কিন্তু চুক্তির বিরোধিতা করে ১৯৯৮ সালে প্রসিত বিকাশ খিসার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ইউপিডিএফ।
গত ৯ জুন খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ২ নম্বর চেঙ্গী ইউনিয়নের বড়কলক এলাকায় এক অনুষ্ঠানে ইউপিডিএফের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতা উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা এ দাবিনামা হস্তান্তর করেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. এমদাদুল ইসলামের কাছে। সেই মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকায় থাকা সাবেক সেনা কর্মকর্তা এমদাদুল ইসলাম ‘দীর্ঘদিনের’ আলোচনা শেষে ‘আনুষ্ঠানিকভাবে’ লিখিত প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন।
ইউপিডিএফের প্রস্তাব শিগগিরই সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছানো হবে বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘আপনি যেমন শুনেছেন, আমিও শুনতে পাচ্ছি। অগ্রগতি তখনই বলি, যখন একটা কিছু হয়। এটা এখনো লিকুইড স্টেজে। একটা কিছু ফর্ম করুক, তারপর বলব।’
প্রস্তাবে কী আছে : চুক্তির আকারে পেশ করা ইউপিডিএফের দাবিনামায় আটটি ভাগ আছে। ৬৬ পৃষ্ঠার ওই প্রস্তাবে মোট ৮৭টি দাবি এবং প্রত্যেক দাবির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। দাবিনামার ভাগগুলো হলো- সাংবিধানিক অবস্থা, সাংবিধানিক আইন ব্যতিত অন্যান্য কতিপয় আইনের রহিতকরণ ও সংশোধন, সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ১৯৮৮ এর সংস্কার, পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন সমূহের সংস্কার, পুলিশ বাহিনী ও প্রশাসন, পুনর্বাসন মামলা প্রত্যাহারসহ অন্যান্য বিষয় এবং চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি ও চুক্তি বলবৎকরণ। ইউপিডিএফের এই প্রস্তাবের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেএসএসের এক নেতা বলেছেন, এ নিয়ে এখনই তারা মন্তব্য করতে রাজি নন। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।












