পাহাড়কে অশান্ত করতে দেব না, জঙ্গিদের ছাড় নেই

সাতকানিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ৮ মে, ২০২৩ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জঙ্গিদের কোনো ছাড় নেই। পাহাড়কে অশান্ত করতে দেব না। আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। যখনই জঙ্গি তৎপরতার কথা শুনেছি, তখনই তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জঙ্গি যেই হোক, যে নামেই হোক, আমাদের কাছে তাদের পরিচয় অস্ত্রধারী, জঙ্গি। তাদেরকে কোনোভাবে ছাড় দেয়া হবে না।

গতকাল সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের ৯৯তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিজিবি একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল, পেশাদার ও ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। এ বাহিনী সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দেশের ৪ হাজার ৪শ ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষা, সীমান্ত ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তায় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সীমান্তে চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচারসহ যেকোনো ধরনের সীমান্ত অপরাধ দমনে বিজিবি সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ে আইসের একটি বড় চালান তারা আটক করেছে। সীমান্ত সুরক্ষা ছাড়াও বিজিবিকে যখন যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা দক্ষতার সাথে পালন করেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ বাহিনীকে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও অত্যাধুনিক সীমান্তরক্ষী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ বাহিনীর সাংগঠনিক মূল কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন করে বিজিবি আজ জল, স্থল ও আকাশ পথে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে সীমান্তে নতুন বিওপি, বিএসপি নির্মাণসহ অত্যাধুনিক সার্ভেইলেন্স, ইকুইপমেন্ট স্থাপন, আধুনিক অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন্স, এটিভি ও অত্যাধুনিক এপিসি, ভেহিক্যাল স্ক্যানার ও দ্রুতগামী জলযান সংযোজন করা হয়েছে। বিজিবির অভিযানিক সক্ষমতাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিন পার্বত্য জেলার সীমান্তগুলো খুবই দুর্গম এলাকায়। বিজিবির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হেলিকপ্টার দেয়া হয়েছে। সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। সীমান্ত সড়কের কাজ হয়ে গেলে পাহাড়ে জঙ্গি তৎপরতা আর থাকবে না। তখন বিজিবি ও পুলিশ সব জায়গায় দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে।

নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিক জীবনের মূল চাবিকাঠি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের মধ্যে তারই প্রতিফলন আমাদেরকে অনুপ্রাণিত ও মুগ্ধ করেছে।

এর আগে বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে ৯৯তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান ও বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মসিউর রহমান।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

৯৯তম রিক্রুট ব্যাচে ৫০২ জন পুরুষ ও ৩৭ জন মহিলা রিক্রুট ২৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ শেষ করে গতকাল কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সৈনিক জীবনে পদার্পণ করেন। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৯৯তম রিক্রুট ব্যাচের মধ্যে শারীরিক উৎকর্ষে সেরা নবীন সৈনিক মো. ফাহিম আবরার (পুরুষ), লাকী আক্তার (নারী), ফায়ারিংয়ে মো. আকিজ জাভেদ ও সর্ব বিষয়ে সেরা নবীন সৈনিক মো. সুহেল মিয়াকে ক্রেস্ট প্রদান করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাহিদা বাড়ায় আইসে ঝুঁকছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা
পরবর্তী নিবন্ধএকশ বিশ কোটি টাকার আইস জব্দ