নিম্নচাপের প্রভাবে বান্দরবানে টানা বর্ষণে বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসে পড়েছে। পাহাড় ধসে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বান্দরবান–রুমা উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল সকাল নয়টা পর্যন্ত গত চব্বিশ ঘণ্টায় ১৭৩ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে জেলায়। এদিকে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে স্থানীয়দের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা জানায়, গত বুধবার থেকে জেলার সাতটি উপজেলায় থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার সাতটি উপজেলার চৌত্রিশটি ইউনিয়নে ২২০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এদিকে টানা ভারী বৃষ্টিতে রুমা, থানচি, লামা–সূয়ালক, রোয়াংছড়ি–রুমা, থানচি–আলীকদমসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো পাহাড় ধসে সড়কে কাদা মাটি জমে সড়কগুলো পিচ্ছিল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলা সদরের আর্মীপাড়া, শেরেবাংলা নগর, ইসলামপুর, ওয়াবদ্রা এলাকাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সড়কে জমে গেছে হাঁটু পানি। আর্মী পাড়ার বাসিন্দার ইমরান উদ্দিন ও ক্যাচিংঘাটার ওয়েন্টিং মারমা বলেন, পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় দুদিনের বৃষ্টিতেই শহরের নিম্নাঞ্চলের সড়কগুলো জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে। অসংখ্য ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ক্যাচিংঘাটায় বৃষ্টিতে ধসে গেছে সড়ক’সহ প্রতিরক্ষা দেয়াল। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরবাসী।
পরিবহন শ্রমিক নেতা মো. জাফর উল্লাহ বলেন, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে অভ্যন্তরীণ সবগুলো সড়কেই ছোটবড় পাহাড় ধসে পড়েছে। রুমা সড়কের মুরুঙ্গ বাজার এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ায় রুমা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টিতে সড়কে পাহাড়ের মাটি ধসে সড়কগুলো পিচ্ছিল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, বৃহস্পতিবার থেকে জেলার সাতটি উপজেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো’সহ বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। প্রাণহানির আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও ফায়ার সার্ভিস ও রেডক্রিসেন্টের লোকজন মাইকিং করে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র এবং কন্টোল রুম খোলা হয়েছে ।