বিস্তীর্ণ ও উন্মুক্ত পাহাড়ি এলাকা আর হাজার হাজার একর পতিত জমির জনপদ মীরসরাই উপজেলা এলাকায় সহজেই ব্যাপকভাবে আদা চাষ সম্ভব। উপজেলার অন্তত সহস্র একর জমিতে প্রান্তিক ও মাঝারি বা বৃহত্তর ভিন্ন ভিন্ন পরিসরেই এই মসলা জাতীয় পণ্য উৎপাদন খুবই সহজতর। দেশে বর্তমানে ও আদার মূল্য আড়াইশত থেকে তিন শত টাকা। এমন চড়ামূল্যের এই অতি প্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যটি মীরসরাই উপজেলাতে সহজতর ভাবেই চাষাবাদ বৃদ্ধি সম্ভব। মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে আদা অন্যতম। বর্তমানে আদা চাষ বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষিপ্রধান মীরসরাই উপজেলার পাহাড়ি ও সমতল সহ বিভিন্ন স্থানে স্বল্প ও বৃহত্তর পরিসরে আদা চাষের সম্ভাবনা ব্যাপক।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলার ৩০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়। এতে প্রতি হেক্টরে ২২ টন করে আদা উৎপাদিত হয়। এতে মোট উৎপাদনের পরিমান ৬৬০ টন। কৃষি বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে, উক্ত উপজেলায় আরও প্রায় ৫ থেকে ৭ শত হেক্টর জমিতে আদা চাষ সম্ভব। ন্যূনতম ৭০০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হলে ১৫ হাজার ৪ শত টন আদা শুধু মীরসরাই উপজেলা থেকেই উৎপাদন সম্ভব। এতে করে দেশের বৃহত্তম একটি বিভাগের আদার চাহিদাও পূরণ সম্ভব। উপজেলার করেরহাট এলাকার আদা চাষি কংকন ত্রিপুরা বলেন, আমি পাহাড়ের কাছে কিছু আদা প্রতি বছর রোপণ করি। এতে বছরে প্রায় ৫০ হাজার টাকা উপার্জন হয়। সামনে আরও বাড়ানোর চিন্তাভাবনা আছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আদা রোপনের পর সামান্য বৃষ্টি হলেই আর সেচের প্রয়োজন হয় না। আদার জমিতে তেমন কোন রোগ–বালাই দেখা যায় না। আদা রোপনের ৯ থেকে ১০ মাস পর উঠানোর উপযোগী হয়। গাছের প্রায় সব পাতা শুঁকিয়ে গেলে আদা তোলা হয়। ফলন প্রতি হেক্টরে ১২–১৩ টন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, এখন বস্তায় আধুনিক পদ্ধতিতে আদা চাষে খরচ আরও কম। তাই আমরা নতুন এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করতে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করছি। উপজেলায় পর্যাপ্ত পতিত জমি রয়েছে, যে কেউ উদ্যোগ নিলেই আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।