পাহাড়ঘেরা শীতল স্বচ্ছ পানির ফয়’স লেক

নুসরাত সুলতানা | সোমবার , ২৪ মার্চ, ২০২৫ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী সকালবেলা যথাসময়ে আমরা ঘর থেকে বেরুলাম। গন্তব্য খুব বেশি দূরে নয়। একেবারেই আমাদের ঘরের কাছে। তবুও সবার সাথে দেখা হবে, সারাটা দিন ব্যস্ততায় কেটে যাবে, আনন্দ উপভোগ করবো এই পরিকল্পনাতেই আমরা আনন্দ নিয়ে রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে রওনা দিলাম। যেহেতু শুক্রবারের সকালবেলা তাই পথে কোনো জ্যাম পেলাম না। আমরা আমাদের বাসা থেকে দশপনের মিনিটের মধ্যেই সকাল ৮:১৫ তে পৌঁছে গেলাম আমাদের নির্দিষ্ট গন্তব্য ঘন সবুজ পাহাড়ে ঘেরা, স্বচ্ছ পানির লেক ‘ফয়’সলেকে’। বলছি (২১ ফেব্রুয়ারি) বিএমএস এর ফ্যামিলি গেটটুগেদার২০২৫ অনুষ্ঠানের কথা।

ফয়‘স লেক চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থিত একটি কৃত্রিম হ্রদ। ১৯২৪ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে রেলওয়ে কলোনিতে বসবাসকারী লোকদের নিকট পানি পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে এই লেক খনন করা হয়। সেসময় এটি পাহাড়তলী লেক হিসেবে পরিচিত ছিলো। পরবর্তীতে ইংরেজ রেল প্রকৌশলী ফয়এর (ঋড়ু) নামে এই লেকের নামকরণ করা হয় ‘ফয়’স লেক’।

বর্তমানে এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাভুক্ত। চট্টগ্রাম শহরের উত্তর দিকের পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহের দিক পরিবর্তনের মাধ্যমে এই লেকটিকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই লেক বা হ্রদকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড “ফয়’স লেক কনকর্ড” নামে বিনোদন উদ্যান স্থাপন করে, যেখানে দর্শনার্থীদের জন্য হ্রদে নৌকাভ্রমণ, রেস্তোরাঁ, ট্র্যাকিং এবং কনসার্টএর আয়োজন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে এখানে বিরল প্রজাতির পাখি এবং পার্কে হরিণ দেখার ব্যবস্থা আছে। ফয়’স লেকের পাশেই অবস্থিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এছাড়াও দর্শনার্থীরা কটেজ ভাড়া করে থাকতে পারেন। ফয়’স লেকের আশেপাশের মনোরম পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে প্রতি বছর বহু দেশিবিদেশি পর্যটক ছুটে আসেন।

গাড়ি থেকে নেমে গেইটের দিকে এগিয়ে যেতেই দেখা হলো মাহতাব ভাই এবং আরো কয়েকজন মেরিনারের সাথে। গেটের দিকে তাকাতেই ভালোলাগায় আচ্ছন্ন হলো মন। বাংলাদেশের বৃহত্তম নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড বিল্ডার্স অনেক সুন্দর অসাধারণ কারুকার্য খচিত বিশাল আকারের সুদৃশ্য কটেজ ও তোরণের সমন্বয়ে গেইট বানিয়েছে। গেইটে লেখা আছে “কনকর্ড এমিউসমেন্ট ওয়ার্ল্ড ফয়’স লেক”। পরিচিত জনদের সাথে কুশলাদি বিনিময় শেষে আমরা প্রবেশ করলাম গেইটের ভিতরে।

অনেকদিন পর এসেছি এবার। অনেক পরিবর্তন চোখে পড়লো। বিশাল আকারের গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললাম। আমাদের কয়েকজন এক্স ক্যাডেট (জুনিয়র ব্যাচের) অপেক্ষা করছিলো আগে থেকেই। তারা আমাদেরকে আমাদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট সাইজ অনুযায়ী টিশার্ট বুঝিয়ে দিলো। আমরা পাঁচটা টিশার্ট এবং সারাদিনের প্রয়োজনীয় কুপনগুলো বুঝে নিলাম। এরপর দ্বিতীয় গেইট চোখে পড়লো। দ্বিতীয় গেটটাও অনেক সুন্দর, দারুণ। বিশাল আকারের কটেজের ডিজাইনে শত রকমের কারুকার্যখচিত এই গেইটে লেখা আছে ‘ওয়েলকাম টু অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড, এন্ড প্যারাডাইস ভ্যালি’! সত্যি মনের মধ্যে আনন্দ নিয়ে যখন প্রবেশ করছিলাম মনে হচ্ছিলো অভ্যর্থনা জানানোর জন্য এর চেয়ে দারুণ ভাষা আর হতে পারে না। ঠিক সাড়ে আটটায় আমরা আমাদের প্যারাডাইস ভ্যালিতে প্রবেশ করলাম।

অসাধারণ সুন্দর এই লেকের প্রবেশপথে ডানে বামে সুউচ্চ পাহাড়। শুরুতেই ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ড। বেশ কিছু আধুনিক রাইড আছে এখানে। ছোট থেকে বড় সব বয়সী মানুষের উপযোগী বিভিন্ন রকমের রাইডএর ব্যবস্থা আছে। সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ড্রাই স্লাইড, ফ্যামিলি ট্রেইন, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, পাইরেট শিপের মতো মজাদার সব রাইড।

হরেক রকমের রাইডস দিয়ে সাজানো সুন্দর পার্কের পরিচ্ছন্ন পথ ধরে প্রবেশ করে একটু যেতেই দেখা হলো মনোয়ার ভাইয়ের ফ্যামিলির সঙ্গে। ভাবির সাথে আগে থেকেই পরিচয়। কুশলাদি বিনিময় শেষে অল্পদূর যেতেই চোখে পড়লো ছোটো একটা সুন্দর ডিজাইনের ব্রিজ। কার্ভ শেপের ছোট্ট ব্রিজটার উপর দাঁড়ালে খুবই ভালো লাগলো। ছলছল কলকল করে বয়ে যাচ্ছে পানি। এর মাঝে আরো কয়েকজন মেরিনার ভাইভাবিদের সাথে দেখা হলো। সবাই মিলে হাঁটতেহাঁটতে সামনের দিকে এগিয়ে অনেকগুলো সিঁড়ি পেরিয়ে উপরের দিকে উঠতে শুরু করলাম। ঝরনার মতো করে লেকের স্বচ্ছ পানি গড়িয়ে পড়ছে সিঁড়ির ভাঁজেভাঁজে। দারুণ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। দু’পাশে ঘনসবুজ বন। বড় বড় বৃক্ষের ছায়ায় শীতল আবহাওয়ায় সবুজশ্যামল বনানীর পাশ ঘেঁষে উপরে উঠতেই চোখে পড়লো লেকের স্বচ্ছ জল। এখানেই আছে বনভোজন কেন্দ্র। আরেকটি টিলার উপরে আছে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। বার্ডস আই দিয়ে চট্টগ্রাম শহরের ভিউ দেখা যায় জায়গাটি থেকে। প্রকৃতির মাঝে নির্জনতায় অবকাশ যাপনের জন্য ফয়’স লেকে আছে বেশ কিছু রিসোর্ট। সিওয়ার্ল্ডের পাশেই এগুলোর অবস্থান। এই রিসোর্টগুলোতে যেতে হয় নৌকা কিংবা বোটে চড়ে। নির্জনতায় সময় কাটানোর জন্য দারুণ জায়গা এসব রিসোর্ট। লেকপাহাড় সব মিলে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। চারদিকে পাহাড় আর মাঝখানে রয়েছে অরুনাময়ী, গোধূলী, আকাশমনি, মন্দাকিনী, দক্ষিণী, অলকানন্দা নামের অনেকগুলো হৃদ। হ্রদের পাড়ে যেতেই দেখা মিলে সারি সারি নৌকার।

সবদিক থেকে সবুজ পাহাড় আর লেকের গভীর শীতল সবুজ স্বচ্ছ জলের মিতালী মনে সাধারণ অনুভুতি জাগিয়ে তোলে। বড় করে লেখা ‘ফয়’জ লেক বেস ক্যাম্প’

লেখাটাতে চোখ পড়তেই দুর্দান্ত অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় এই আমার মনে অন্য রকম শিহরণ জাগলো। কিছুক্ষণের জন্য মনে হলো ইশ্‌ যদি বেসক্যাম্পে এটেন্ড করতে পারতাম! অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হলেও আমার অতোটা সাহস নেই যে বেসক্যাম্পে এটেন্ড করতে পারবো। যাইহোক আমরা আমাদের প্রথম কুপনগুলো ব্যবহার করে আমাদের ফুল ফ্যামিলির ব্রেকফাস্ট নিলাম। পরিচ্ছন্ন লেকের পাড়ে নির্মল বাতাসে সাজানো গোছানো চেয়ার টেবিলে বসে আমরা তৃপ্তির সাথে ব্রেকফাস্ট করলাম। এরই মাঝে সাজ্জাদ ভাই, জাকারিয়া ভাই, জুলফিকার ভাই, তাহের ভাই, এরশাদ ভাই, রাব্বানী ভাই, মোস্তাক, ওসমান এরকম আরো কয়েকজনের সাথে দেখা হলো। সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় করতে করতেই আমরা এগিয়ে গেলাম বোট স্টেশনের দিকে। এখান থেকে অনবরত দশটি বোট আসাযাওয়া করে ওয়াটার পার্ক পর্যন্ত। ৯:৩০ টায় আমরা সারিবদ্ধভাবে বোটে উঠে বসলাম। সাথে সাথেই বোট ছেড়ে দিলো ওয়াটার পার্কের উদ্দেশ্যে। বোটের গরগর শব্দ ভালো না লাগলেও এমন একটা লেকের পানিতে যখন চলছিলাম তখন বোটের আওয়াজটা তেমন বিরক্তিকর ঠেকেনি। ওয়াটার পার্কে পৌঁছতে সময় লেগেছে মিনিট দশেক। এরই মাঝে মন ভরে চোখ ভরে প্রকৃতিকে উপলব্ধি করছিলাম আমরা। সবাই সেলফোনে ভিডিও ধারণ করছিলাম, ছবি তুলছিলাম। চলতে চলতে কিছুক্ষণ পরপরই অন্যান্য বোট গুলোর দেখা মিলে। কী সুন্দর এই ছুটে চলার দৃশ্য! দুপাশে ঘন সবুজ বন, সবুজ শান্ত শীতল স্বচ্ছ পানি। মুহূর্তে আমার মনে পড়লো ‘সিঙ্গাপুর জু’ এর কথা। ওখানেও আমরা বোট রাইডে চড়েছিলাম। বোটে চড়ে লেকের পানিতে ছুটতে ছুটতে আশেপাশের হরিণ, হাতি, জিরাফ দেখেছিলাম। সেই ‘সিঙ্গাপুর জু’ এর সৌন্দর্যের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় আমাদের দেশের এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

তারপরই দেখা মিললো চমৎকার রিসোর্টের; দুই দিকে সবুজ পাহাড়, মাঝে মধ্যে দুএকটি বক এবং নাম না জানা হরেকরকম পাখি। এর সাথে রয়েছে মনোরম পরিবেশে হরিণ বিচরণ স্থান। তবে ফয়’স লেকের মূল আকর্ষণ নিঃসন্দেহে লেকের সৌন্দর্য ও তার পার্শ্ববর্তী পাহাড়। কয়েকটি পাহাড়ে জনবসতি আছে। পাহাড়ে বসবাসকারী পরিশ্রমী মানুষেরা কলসি ভরে পানি তুলে নিয়ে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করে। এসব দৃশ্য দেখতে অনেকটা স্বপ্নের মত মনে হচ্ছিলো…!

আমরা পৌঁছে গেলাম ওয়াটার পার্কের বোট স্টেশনে। এই এলাকায় লেকের পানিতে বেশ কয়েকটি লাল শাপলা ফুটেছে। সূর্যের আলোয় চমৎকারভাবে ফুটে আছে শাপলা ফুলগুলো। সাবধানে আমরা বোট থেকে নেমে সিঁড়ি ডিঙিয়ে উপরে উঠলাম। গল্প করতে করতে সবাই হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম ‘সি ওয়ার্ল্ড’ ওয়াটার পার্কে। এরই মাঝে সূর্যমুখী ফুলগুলো আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য সদর্পে দাঁড়িয়ে আছে। এতো সুন্দর চমৎকার সূর্যমুখী ফুল যে কারোরই ভালো লাগবে, নজর কাড়বে। ‘সি ওয়ার্ল্ড’ হচ্ছে ফয়’স লেকের একটি ওয়াটার থিম পার্ক। স্‌প্লাশ পুল, ওয়াটার কোস্টার রাইড এবং আধুনিক ওয়াটার পার্কের বিভিন্ন রাইড আছে ‘সি ওয়ার্ল্ডে’। আমরা সরাসরি ওয়েব পুলের কাছে পৌঁছে গেলাম। আজমাঈনকে ড্রেস চেঞ্জ করে পানিতে নামতে সুযোগ করে দিলাম। আমরা পাড়ে চেয়ারে বসে ওর আনন্দ উপভোগের দৃশ্য দেখতে লাগলাম। মুহূর্তেই হুড়মুড় করে অনেকেই নেমে পড়লো পানিতে। পুলে ঢেউগুলো অনবরত আসছে আর সবাই কক্সবাজারের মতোই লাফিয়ে লাফিয়ে পানিতে নেমে যাচ্ছে। অনেক জোরে গান ছেড়েছিলো ওয়েবপুল এরিয়ায়। ইদানিং আওয়াজ সহ্য হয়না আমার। তাই মাথায় আঘাত লাগছিলো। ফলে খুব দ্রুত আমরা আমাদের দ্বিতীয় কুপন ব্যবহার করে নাস্তাগুলো নিয়ে খাওয়া শেষ করলাম। এরই মাঝে সবাই ফটোসেশন করছিলো, অনেক আনন্দের সাথে গল্প করছিলো। মেঘমুক্ত এই দ্বিপ্রহরে সূর্যকিরণ এতোটাই তেজে মাথার উপর পড়ছিলো কিছুক্ষণ সময়ের জন্য হাঁপিয়ে উঠলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এখনই ব্যাক করবো। ১২ টার দিকে খুব দ্রুত হাঁটতে হাঁটতে আমরা বোট স্টেশনে চলে এলাম। অনবরত দশটা বোট আসাযাওয়া করে। তাই কাউকে খুব বেশি ওয়েট করতে হয় না। বোট আসার সাথে আমরা চড়ে বসলাম। আবার সেই শীতল জলে আমাদের বোট চলতে শুরু করলো। আবার মনে শান্তি এলো। এতো সুন্দর, এতো সুন্দর কেনো! প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আমাদের আসলেই খুব বেশি দূরে যেতে হয় না। ঘরের কাছেই প্রকৃতি আমাদের জন্যে সবকিছু সাজিয়ে রেখেছে। শুধু একটু চোখ মেলে তাকালেই হয়।

বারবার মনে পড়ছিলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই বিখ্যাত কবিতা

বহুদিন ধরে, বহু ক্রোশ দূরে

বহু ব্যয় করি, বহু দেশ ঘুরে

দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা

দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

ঘর হতে শুধু দু’পা ফেলিয়া

একটি ধানের শীষের উপর

একটি শিশিরবিন্দু।

এপারে এসে আমরা মায়েরা সন্তানদেরকে নিয়ে বসেছিলাম। আর বাচ্চাদের বাবারা জুমার নামাজে গেলো। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আমরা লাঞ্চ করতে গেলাম। সেই পরিছন্ন সুন্দর কটেজে লেকের পাড়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে লেকের শীতল স্বচ্ছ জলে পর্যটকদের নিয়ে অনবরত বোটের আসা যাওয়া দেখতে দেখতে আমাদের তৃতীয় কুপনগুলো ব্যবহার করে লাঞ্চ শেষ করলাম। লেকের পানিতে দুপুরের সূর্যকিরণ চিকচিক করে উঠলোঅভূতপূর্ব দৃশ্য।

আমরা লাঞ্চ শেষ করে নিচে নেমে এলাম। এরই মাঝে পুরুষেরা সবাই নামাজ শেষ করে এসে লাঞ্চ করলো। গল্পে গল্পে সময় দ্রুত কেটে যাচ্ছিলো সবার। কষ্ট করে সময় বের করে ঢাকা থেকে অনেকেই এসেছেন। অবশ্য ঢাকায় অনুষ্ঠান হলে চট্টগ্রাম থেকে আমরাও যাই। এতে বন্ডিংস শক্ত হয়, চেনা জানার পরিধি বিস্তৃত হয়, কমিউনিটির সবাই সবাইকে চিনতে পারে। বাৎসরিক এই প্রোগ্রামগুলোতে অবশ্যই সবারই অংশগ্রহণ করা উচিত বলে মনে করি।

কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হলো আবৃত্তি, গান পরিবেশনা। সাথে চললো বাচ্চাদের এবং বড়দের সবার জন্য নির্ধারিত প্রতিযোগিতা। একটা আনন্দের বিষয় হলো এবার অমর একুশে বইমেলায় জামিল ভাইয়ের ‘মায়ের আঁচল’ বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে আমার ‘চট্টগ্রামের পর্যটন ঐতিহ্য ও সম্ভাবনা’ গ্রন্থ। মহা উৎসাহে আমরা সবাইকে বই উপহার দিচ্ছিলাম। তবে কয়েকজন আমাদেরকে শুভেচ্ছা স্বরূপ সম্মানি দিয়েছেন। জামাল ভাই, ডালি ভাই, রইচ উদ্দিন ভাই শফিক ভাই, এরকম কয়েকজন আমাদের অটোগ্রাফও নিলেন। এতে আমরা আসলেই অনেক সম্মানিত বোধ করেছি। এরই মাঝে সবাই চতুর্থ কূপন ব্যবহার করে বিভিন্ন রাইডস চড়ে আনন্দ নিয়েছেন।

অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে বিএমএস এর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রশিদ সাহেব এলেন। সূর্য যখন পশ্চিমে হেলে পড়েছে তখন তিনি সব বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন। সবশেষে বক্তব্য রাখলেন। তাঁর হাতেও আমরা তুলে দিলাম আমাদের বই। শেষ বিকেলের আলোয় সবাই পঞ্চম কুপন ব্যবহার করে বিকেলের নাস্তা এবং চাপর্ব সেরে গল্প করতে করতে সুন্দর স্মৃতি নিয়ে আপাতত সবাই সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যার যার নির্দিষ্ট গন্তব্যে ফিরে এলাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেখি বাংলার মুখ : শফিক হাসানের ভ্রমণগ্রন্থ
পরবর্তী নিবন্ধমানুষে মানুষে সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে