পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীতের হাতে ধরা আনসার সদস্য

| বুধবার , ১৪ আগস্ট, ২০২৪ at ১০:০৬ অপরাহ্ণ

কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলেও পাসপোর্ট অফিসে এসে বিভিন্ন দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রতিটি ধাপে ধাপে গুণতে হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তবেই মিলবে স্বপ্নের পাসপোর্ট।

নয়তো দিনের পর দিন, বছরের পর বছর পার করলেও হয়রানি ছাড়া কিছুই মিলবে না এই কার্যালয়ে। প্রায় দীর্ঘ বছর ধরে দালাল চক্রের সিন্ডিকেট, অফিসের কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের যোগসাজশে ঘুষের ব্যবসা চলে আসছে পার্বত্য জেলার বান্দরবানের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে।

এমন অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘুষের টাকার নেওয়ার সময় আনসার সদস্য মো. আনিছুর রহমানকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বান্দরবান-বালাঘাটা সড়কের ব্রিগেড এলাকার সামনে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়। সেখানে প্রতিদিন পাসপোর্ট করতে আসে শতাধিক মানুষ। সবসময় ভবনের ভিতর নীচে কিংবা উপরে ভিড় করতে থাকেন সাধারণ মানুষ। কেউ পাচ্ছেন পাসপোর্ট আবার কেউ দালাল সিন্ডিকেটে চক্রে মাধ্যমে চলছে কথোপকথন।

এমন নানা অনিয়ম ও পাসপোর্ট করতে আসা মানুষকে হয়রানিরসহ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল বান্দরবানের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকতা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু দুপুরে টাকা নেওয়ার সময় পাসপোর্ট কার্যালয়ে মো. আনিছুর রহমান নামে এক আনসার সদস্যকে হাতেনাতে ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে অর্থ উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা।

আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের আনসার সদস্য মো. আনিছুর রহমান বলেন, মোসারফ স্যারের কথায় আমি টাকা নিয়েছি। এছাড়া আমি আর কিছুই জানি না। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের রেকর্ড কিপার মো. মোসারফ হোসেন দালাল চক্রে অন্যতম সদস্য বলে অভিযোগ পাওয়া রয়েছে।

টাকা নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, পাসপোর্ট করতে আসা ব্যক্তির কাছ থেকে আনসারের মাধ্যমে টাকা নিয়েছি।

পাসপোর্ট করতে আসা রফিকুল বলেন, কক্সবাজার থেকে বান্দরবানে পাসপোর্ট করতে আসছি। আসার পর পাসপোর্ট করতে সব ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি। সব কিছু দেয়ার পরও আনসার সদস্য আনিছুর রহমান ১২ হাজার দাবি করে। ১২ হাজার টাকা নেওয়ার পরেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা চাইতে থাকে।

আজ টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে শিক্ষারা তাকে ধরে ফেলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী নজরুল বলেন, অফিস সহকারী মোসারফের কথায় টাকা নেওয়া বিষয়টি আনসার সদস্য আনিছুর রহমান স্বীকার করেছে। তাদের এই সিন্ডিকেট একদিনে নয়। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে আসছিল। তাই প্রতিটি অফিসে ঘুষ ও দুর্নীতিকে মুক্ত করতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা অভিযান পরিচালনা করে আসছে এবং আগামীতেও দুর্নীতিমুক্ত করতে সর্বদা মাঠে থাকবে।

এ বিষয়ে বান্দরবান আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সরকারী পরিচালক আলীম উল্লাহ ভূইয়া বলেন, অভিযোগটির সাথে যারা জড়িত তাদেরকে শনাক্ত করেছি। অফিসের স্টাফ মোশারফের ব্যাপারে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊধ্বর্তন কতৃপক্ষে জানাবো। আর আনসার সদস্যের প্রত্যাহারের জন্য আনসার বাহিনীর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা বরাবর সুপারিশ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে অব্যাহতি
পরবর্তী নিবন্ধচবি ছাত্রলীগের ৫ নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ