শুধু গরু নয়। নগরীর কোরবানি পশুর হাটগুলোতে ছাগল-ভেড়াও বিক্রি হচ্ছে সমানতালে। গরুর চেয়ে দাম তুলনামূলকভাবে কম ভেড়া ও ছাগলের। তাই যাদের গরু কেনার সামর্থ্য নাই তারা কিনছেন ছাগল ও ভেড়া। অবশ্য অনেকে গরুর পাশাপাশি কিনছেন ছাগল-ভেড়াও। তাছাড়া অনেক পরিবারে কোরবানি ওয়াজিব এমন সদস্য সংখ্যা বেশি। তাই গরুর সঙ্গে ছাগল-ভেড়া কিনছেন। কেউবা স্বজনদের উপহার দিতে কিনছেন। সব মিলিয়ে কোরবানি পশুর হাটে বেশ চাহিদা আছে ছাগল-ভেড়ার।
কোরবান উপলক্ষে এবার নগরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থায় সাতটি পশুর হাট বসাতে ইজারাদার দেয়া হয়। এর মধ্যে চারটি অস্থায়ী। এগুলো হচ্ছে- কর্ণফুলী গরু বাজার (নুর নগর হাউজিং এস্টেট), সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন বাজার, পতেঙ্গা লিংক রোড সংলগ্ন খেজুর তলা মাঠ এবং ৪১ নম্বর ওয়ার্ডস্থ বাটারফ্লাই পার্কের পাশের হাট। এছাড়া আছে তিনটি স্থায়ী পশুর হাট। হাটগুলো হচ্ছে- সাগরিকা পশুর বাজার, বিবিরহাট গরুর হাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। অবশ্য খেজুর তলা মাঠের বাজারটিতে ইজারাদার নিয়োগ দেয়া হয় উন্মুক্ত নিলাম পদ্ধতিতে। ১ জুলাই থেকে বাজার বসলেও ৩০ জুন সেখানে ইজারাদার নিয়োগ দেয়া হয় তড়িঘড়ি করে। এদিকে বাজারটিতে ইজারাদার নিয়োগ দেয়ায় পার্শ্ববর্তী ৪১ নম্বর ওয়ার্ডস্থ বাটারফ্লাই
পার্কের দক্ষিণে টি কে গ্রুপের মাঠের অস্থায়ী হাটের ইজারাদার তাদের টাকা ফেরত চায় চসিকের কাছে। তাদের দাবি, খেজুরতলা মাঠের হাট বাটারফ্লাই পার্ক হাটের আগে। ফলে এ মাঠে কোরবানি পশু আনা নেয়া ও জমায়েতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে গতকাল সাগরিকা, বিবিরহাট, নূর নগর হাউজিং ও পোস্তারপাড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাজারে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, নাটোরসহ অন্যান্য এলাকা থেকে গরু এনেছেন বেপারিরা। এছাড়া চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, আনোয়ারা ও বাঁশখালী থেকে গরু আনা হয় বিক্রির জন্য।
পোস্তারপাড়ের পাশাপাশি এসব বাজারেও বিক্রি হচ্ছে ছাগল ও ভেড়া। বিবিরহাটে একটি দুম্বাও দেখা গেছে। সাগরিকা পশুর হাটে দুটি ছাগলের দাম দেয়া হয় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। বেপারি কবির জানান, ছাগলগুলো কুষ্টিয়া থেকে এনেছেন। এছাড়া সাগরিকাসহ অন্যান্য বাজারে ১৫-২০ হাজার টাকা দামের ছাগল বিক্রি হচ্ছে বেশি। ভেড়ার দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। ভেড়া বিক্রি হচ্ছে ১২-১৩ হাজার টাকায়।
গতকাল সাগরিকা পশুর হাটে একটি গরুর দাম রাখা হয় ১৫ লাখ টাকা। মালিক ওই গরুর নাম দেন ‘র্যাম্বু’। ‘বাহুবলী’ নামে আরেকটি গরুর দাম রাখা হয় ১২ লাখ টাকা।
গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, উট এবং দুম্বা দিয়ে কোরবানি হয়। নগরের পশুরহাটগুলোতে উট ছাড়া অন্যান্য পশুগুলো চোখে পড়েছে। কোরবানির জন্য গতকাল বুধবার সাগরিকা পশুর হাট থেকে ১৪ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সজীব। আলাপকালে তিনি দৈনিক আজাদীকে বললেন, আমার আয় সীমিত। কোরবানিও দিতে হবে। কিন্তু গরুর দাম বেশি। তাই ছাগল কিনলাম। তবে এটা নিয়ে আমার আফসোস নাই। একই বাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ছাগল কেনা ব্যবসায়ী সেলিম বললেন, মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে দেয়ার জন্য কিনলাম।