পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ সালের আইন ‘বাতিলের ষড়যন্ত্র’র অভিযোগে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইউপিডিএফ ও দলটির সমর্থিত বিভিন্ন সংগঠন।
খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি–চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইউপিডিএফের নেতাকর্মীরা। এতে কিছু সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক লালন চাকম, পার্বত্য নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী কনিকা চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের আহ্বায়ক এন্টি চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) জেলা সভাপতি শান্ত চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আদালতের মাধ্যমে চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস রেগুলেশন বাতিলের যড়যন্ত্র চলছে। শাসনবিধিটি বাতিল হলে রাজা–হেডম্যান–কার্বারিদের পদবি বিলোপ এবং পাহাড়িদের প্রথাগত অধিকার হরণ হবে। সমাবেশের পরে বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রাঙামাটি : রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, রাঙামাটি–চট্টগ্রাম মহাসড়কের বেতবুনিয়া বাজারে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইউপিডিএফ সমর্থিত তিন সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাঙামাটি–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া বাজারে প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুইপাশেই যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশের সময় পুলিশ কয়েকবার নেতাকর্মীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীরা বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। পুলিশ কয়েকধাপে চেষ্টা করেও নেতাকর্মীদের সড়ক থেকে সরাতে পারেনি। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নেতাকর্মীরা কর্মসূচি শেষ করলে সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
বেতবুনিয়া বাজারের অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ–সাধারণ সম্পাদক নিকন চাকমা, পিসিপি কাউখালী উপজেলা শাখার সভাপতি দীপায়ন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম উপজেলা শাখার সভাপতি থুইমং মার্মা। এ সময় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াসোনা চাকমাসহ তিন সংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, রাঙামাটি জেলা শহরের শিমুলতলী টিভি স্টেশন এলাকায় পৃথকভাবে সড়কে অবস্থান ধর্মঘট করে ইউপিডিএফের তিন সংগঠন। সেখানেও প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক বন্ধ রাখে নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে বাগবিতণ্ডা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধি আইনটি হাইকোর্ট বাতিল করেছিল। পরে আপিল বিভাগ আইনটি বহাল রাখে। এরপর এক ব্যক্তি আপিল বিভাগের রায় রিভিউয়ের আবেদন জানান। বর্তমানে রিভিউটি চূড়ান্ত শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।