পার্বত্য গ্রামীণ জনপদে পানির কষ্ট

শুকিয়ে গেছে পাহাড়ি ছড়া

কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই | মঙ্গলবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ

পাহাড়ি গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর নিত্য ব্যবহার্য্য পানির প্রধান উৎস্য হলো পাহাড়ি ছড়া। দৈনন্দিন প্রয়োজন বিশেষ করে গোসল করা, কাপড় ধোয়া এবং সাধারন ব্যবহারের জন্য স্থানীয় জনগণের প্রধান উৎস্য হলো ছড়ায় প্রবাহিত পানি। কিন্তু ছড়াগুলো এখন শুকিয়ে যাওয়ায় মানুষের কষ্ট চরম আকার ধারণ করেছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে কাপ্তাই, রাজস্থলী, কাউখালীসহ বিভিন্ন উপজেলার ছড়ার অধিকাংশ এখন শুকিয়ে আছে। ছড়ায় পানির প্রবাহ একেবারেই নেই। কাপ্তাই এবং কাউখালী উপজেলার স্থানীয় জনগন জানান, যেসব দরিদ্র মানুষ পাড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করেন তারাই পাহাড়ি ছড়ার উপর নির্ভরশীল। ছড়ার পানি দিয়ে তারা রান্না, গোসল করাসহ সকল কাজেই ছড়ার পানির উপর ভরসা করে থাকেন। কিন্তু এখন ছড়া শুকিয়ে যাওয়ায় তাদের পানির কষ্ট বহুগুণ বেড়ে গেছে। বিশেষ প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ায় যাচ্ছেন। কিন্তু সর্বত্রই একই দৃশ্য। সবখানেই ছড়া শুকিয়ে আছে।

ওয়াগ্‌গা ইউনিয়নের হৃকেষ তনচংগ্যা জানান, শুধু ছড়া নয় কোন কোন স্থানে টিউবওয়েল থেকেও পানি পাওয়া যাচ্ছেনা। পানির জন্য কোন কোন স্থানে হাহাকার দেখা দিয়েছে। দূরের কোন জনপদে পানির সন্ধান পাওয়া গেলে সেখানেই মানুষ পানির জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। তবে যেখানে গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে সেখানে এখন পানি পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু অনাবৃষ্টি আরো দীর্ঘ সময় বহাল থাকলে আরো বেশি সংখ্যক গভীর নলকূপ পানি শুন্য হবারও আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান চিরনজিত তনচংগ্যা ওয়াগ্‌গা ইউনিয়নে পাহাড়ি ছড়া গুলো শুকিয়ে গেছে বলে এই প্রতিনিধিকে জানান। তিনি বলেন, গত নভেম্বর মাস থেকে এলাকায় বৃষ্টি হয়নি। পাহাড়ে বৃষ্টি হলে সেই পানি ঝর্ণা ধারা হয়ে পাহাড়ি ছড়া দিয়ে প্রবাহিত হয়। দীর্ঘ ৪ মাস বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাহাড়ের ঝর্ণা ধারা গুলোও শুকিয়ে গেছে। যার ফলে পাহাড়ের ঝর্ণা থেকেও কোন পানি ছড়ায় ঝরে পড়ছেনা। তবে আবার বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে বলেও তিনি জানান। বৃষ্টি হলে বৃষ্টির সাথে সাথে ছড়া গুলো সতেজ হয়ে উঠবে। পাহাড়ি ছড়ায় পানির প্রবাহ পুনরায় শুরু হবে। তবে আপাতত বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া কোন উপায় নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে দুবৃর্ত্তের গুলিতে শ্রমিক আহত
পরবর্তী নিবন্ধমাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সন্দীপনার সেমিনার