পার্থের ব্যারাক স্কোয়ার সোয়ান নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক ‘বেল টাওয়ার’

লিপি বড়ুয়া | শনিবার , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ১:৩২ অপরাহ্ণ

ভ্রমণ, যা সাধারণত পর্যটন বা পারিভ্রমণ নামেও পরিচিত, মানুষের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। এটি কেবল স্থান পরিবর্তন নয়, বরং নতুন সংস্কৃতি, অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান অর্জনের একটি মাধ্যম। ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ নিজেদের সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে এবং ভিন্ন পরিবেশ ও প্রকৃতির সান্নিধ্যে শান্তি খুঁজে পায়। ভ্রমণ আমাদের জীবনে বিভিন্নভাবে উপকার করে। এটি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, নতুন জিনিস শিখতে সাহায্য করে এবং সৃজনশীলতা বাড়ায়। ভ্রমণের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা এবং মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে পারি। একই সাথে, এটি আমাদের একঘেয়েমি জীবন থেকে মুক্তি দেয় এবং নতুন উদ্যম ও অনুপ্রেরণা যোগায়। আমি ভ্রমণ পিপাসু মানুষ তাই সুযোগ সময় হলে বেরিয়ে পড়ি ভ্রমণে। বর্তমান সময়ে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া পার্থ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো ঘুরে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে কন্যা ও জামাতা।

ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরে অবস্থিত বেল টাওয়ার একটি বিখ্যাত স্থাপনা। এটি সেন্ট মার্টিনইনদ্যফিল্ডস চার্চের ঐতিহাসিক ঘণ্টা ধারণ করে, যা ১৪ শতকেরও আগের। এই ঘণ্টাগুলি ১৬ শতকে রানি প্রথম এলিজাবেথ দ্বারা পুনর্বিন্যাস করা হয়েছিল এবং ১৭২৫ থেকে ১৭৭০ সালের মধ্যে গ্লুচেস্টারের ঘণ্টা প্রস্তুতকারক রডাল পরিবারের তিনজন সদস্য এটি পুনরায় ঢালাই করেন। এটি একটি অনন্য বাদ্যযন্ত্র এবং এখানে ইংরেজি পরিবর্তনশীল ঘণ্টা বাজানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

বেল টাওয়ারটি পার্থের ব্যারাক স্কোয়ারে অবস্থিত। পার্থের বেল টাওয়ার বা সোয়ান বেলস নামে পরিচিত একটি ঐতিহ্যবাহী এবং আকর্ষণীয় ল্যান্ডমার্ক, যা সেন্ট মার্টিনইনদ্যফিল্ডস চার্চের ১২টি ঐতিহাসিক ঘণ্টা ধারণ করে। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে ১৯৮৮ সালে ইংল্যান্ড থেকে ১২টি ঘণ্টা পার্থে আনা হয় এবং ২০০১ সালে এই টাওয়ারটি নির্মিত হয়। টাওয়ারটি মূলত একটি বিশ্বমানের ‘ইংলিশ চেঞ্জ রিংগিং’ এর কেন্দ্র হওয়ার জন্য তৈরি।

টাওয়ারের মূল আকর্ষণ হলো ইংল্যান্ডের সেন্ট মার্টিনইনদ্যফিল্ডস চার্চের ১২টি ঘণ্টা, যা ১৪শ শতাব্দীরও আগে থেকে বিদ্যমান ছিল। এটি একটি বিশ্বমানের ঘণ্টা বাজানোর কেনন্দ্র, যা ‘ইংলিশ চেঞ্জ রিংগিং’ এর ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে। এখানে টাওয়ারের বিভিন্ন স্তরে যাওয়া, ঘণ্টার শব্দ শোনা এবং অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম ঘণ্টা অঘতঅঈ ইঊখখ দেখা যায়। এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ এবং এখান থেকে সোয়ান নদী ও শহরের সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়।

১৫ ডলারে টিকেট সংগ্রহ করে এই বেল টাওয়ার পরিদর্শন করার সুযোগ পেলাম। লিফটে টাওয়ার এর উঁচু তলায় উঠে গেলাম। উপরের ফ্লোরে অপূর্ব বাদ্যযন্ত্র সমৃদ্ধ অনেকগুলো ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সুইচ অন করলে বিভিন্ন মিউজিক এর মিষ্টি সুর বাজে সেখানে কয়েন জমা দিয়ে এটি ব্যবহার করতে হয়। সেখান থেকে উপভোগ করা যায় সোয়ান নদীর অপূর্ব দৃশ্য।

আমরা বেশ কিছুক্ষণ সময় সেখানে অবস্থান করলাম এবং চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম এরপর সিঁড়ি বেয়ে নিচের দিকে নামতে থাকলাম এবং লক্ষ্য করলাম প্রত্যেক তলায় বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন এর জন্য রাখা আছে যেমনঅস্ট্রেলিয়া চার ঋতু নিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। টাওয়ারে একটি খোলা পর্যবেক্ষণ ডেক এবং ঘণ্টা বাজানোর ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য প্রদর্শনী রয়েছে। এটি একটি বিশাল বাদ্যযন্ত্র এবং ইংরেজি পরিবর্তনশীল ঘণ্টা বাজানোর একটি চমৎকার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। আপনি এখানে ঘণ্টার অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন, টাওয়ারের বিভিন্ন তলা ঘুরে দেখতে পারবেন এবং ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে একটি ‘লাভ লক’ (ষড়াব ষড়পশ) লাগাতে পারবেন। সত্যি অসাধারণ এই স্থাপনাটি পরিদর্শন করে মুগ্ধ হলাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিন্ডিকেটের হস্ত
পরবর্তী নিবন্ধকালো মানচিত্র