পারিবারিক কলহের জের ধরেই নিজের স্ত্রী শফিকা খানম বিউটি চৌধুরীকে (৩২) জবাই করে হত্যা করে ঘাতক স্বামী জমির উদ্দীন চৌধুরী। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে ভিকটিম বিউটি চৌধুরীর ছোট ভাই মিনহাজ আলম বাদি হয়ে চন্দনাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় হত্যাকারী জমির উদ্দীন চৌধুরীকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। ঘাতক জমির উদ্দীনকে গতকাল আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার বিকেলে চন্দনাইশের হাশিমপুর ইউনিয়নের ছৈয়দাবাদ ১ নং ওয়ার্ডের মৃত নাছির উদ্দীন চৌধুরীর ছেলে জমির উদ্দীন চৌধুরী পারিবারিক কলহের জের ধরে তার স্ত্রী শফিকা খানম প্রকাশ বিউটি চৌধুরীকে (৩২) ঘরের ভিতর গলায় ছুরি চালিয়ে জবাই করে হত্যা করে। এ সময় জমিরের মা শামসুন্নাহার (৯০) বিউটিকে বাঁচাতে ঘরে প্রবেশ করে। পরে ভাইসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এগিয়ে আসতে চাইলে ঘাতক জমির রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। এ সময় জমির তার মাকে জিম্মি করে দরজার সামনে মায়ের গলায় ছুরি ধরে রাখেন। খবর পেয়ে চন্দনাইশ থানার পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা চেষ্টার পর কৌশলে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে রক্তান্ত অবস্থায় গুরুতর আহত শামসুন্নাহারকে উদ্ধার করে। একই সাথে ঘাতক জমিরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরবর্তীতে নিহত বিউটি আক্তারের লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়। এদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় শামসুন্নাহারকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
চন্দনাইশ থানার ওসি (তদন্ত) যুযুৎসু যশ চাকমা জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরেই জমির উদ্দীন এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। অভাব–অনটন থাকায় তার শ্বশুর তাকে প্রায় সময় টাকা পয়সা দিতো বলেও জানা যায়।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমরান আল হোসাইন জানান, ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে ঘাতক জমিরের মা শামসুন্নাহারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে এবং ঘাতক জমির উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি, একটি চাপাতি আকৃতির দা উদ্ধার করা হয়। মামলার আসামি জমির উদ্দিন চৌধুরীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে জমির উদ্দীন চৌধুরী মাঝে–মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়তেন। গত ৮/৯ মাস আগে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন এবং কিছুদিন পর আবার ফিরে আসেন। তবে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন এমন কোন ডাক্তারি ব্যবস্থাপত্র পাওয়া যায়নি।