পারকি সৈকতে এত মাল্টা কোথা থেকে এলো জনমনে কৌতূহল

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৮ জুন, ২০২১ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পারকি সমুদ্র সৈকতের দক্ষিণে পরুয়াপাড়ার আধা কিলোমিটার চর এলাকা জুড়ে মাল্টা আর মাল্টা। রাতের আঁধারে কারা এসব মাল্টা ফলে যায় তা নিয়ে চলছে নানান আলোচনা। তবে স্থানীয় বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ.কাইয়ুম শাহ রবিবার মধ্য রাতে কাভার্ড ভ্যানে করে এনে এসব মাল্টা সৈকত এলাকায় ফেলা হয় বলে জানান। তবে কারা ফেলেছেন তা তিনি জানাতে পারেননি। এ ঘটনায় সৈকতের পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা করছেন অনেকেই। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল আরো বেড়ে যায়। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সিসিটিভির ক্যামরার ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তের চেষ্টা শুরু করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর অপসারণ কাজ শুরু করা হয়। অপসারণ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৪ জুন) সকালে স্থানীয়রা পর্যটন কেন্দ্র পারকি সৈকত এলাকার দক্ষিণে পরুয়াপাড়া বাতিঘর সংলগ্ন চরে আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাল্টা পড়ে থাকতে দেখে এলাকার মানুষের মাঝে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। আবার অনেকে কুড়িয়ে বাড়িতেও নিয়ে যায়। প্রশাসনের ধারণা মেয়াদোত্তীর্ণ এসব মাল্টা কোনো আমদানিকারক বা ব্যবসায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে সৈকতের নির্জন এলাকার বেড়িবাঁধের পাশে বালু চরে ফেলে চলে যান। গত কয়েকদিনের সাগরের জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে মাল্টাগুলো পারকি, পরুয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল আনোয়ার জানান, একটি জাহাজে সৈকতের পরিবেশ বিপন্ন, তার উপর যোগ হল মাল্টা। দ্রুত এসব মাল্টা অপসারণ না করলে সৈকতের পরিবেশ আরো বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ূম শাহ্‌ জানান, গত রবিবার রাতে ১২ টার পর কয়েকটি কাভার্ড ভ্যানে করে এসব মাল্টা এনে সৈকতের বালু চরে ফেলে দেওয়া হয় বলে জানতে পেরেছি। তবে কারা ফেলেছেন তা জানা যায়নি। এসব অপসারণ কাজে দশজন শ্রমিক নিয়োগ করেছি। মাল্টাগুলো সৈকতের চরে গর্ত করে পুঁতে ফেলার কাজ চলছে।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল মাহমুদ জানান, পারকি সৈকতের চরে রেখে যাওয়া মাল্টাগুলো চট্টগ্রাম শহর থেকে নতুন ব্রিজ হয়ে পারকি সৈকতে গেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী (পিএবি) সড়কের নতুন ব্রিজ থেকে চাতরী চৌমুহনী বাজার ও কাফকো সেন্টার এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত সিসি ক্যামরার ফুটেজ দেখে গাড়ি সনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান, সৈকত এলাকায় কারা এসব মাল্টাগুলো ফেলে গেছেন তা এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। বিকালে সরজমিনে পরিদর্শন করে মাল্টাগুলো অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক মুফিদুল আলম জানান, পারকি সমুদ্র সৈকতে রাতের আঁধারে মাল্টা ফেলে রাখার বিষয়টি আমরা জেনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফিরোজশাহে আগুনে পুড়ল চার বসতঘর ও দোকান
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় টমটম চালককে ছুরিকাঘাতে হত্যা