পাবলো নেরুদা : বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি

| সোমবার , ১২ জুলাই, ২০২১ at ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ

চিলিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী একজন লেখক। সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় পুষ্ট পাবলো নেরুদা ছিলেন নিপীড়িত, নির্যাতিত, মেহনতী মানুষের কাব্যিক কণ্ঠস্বর। ১৯৭১ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯০৪ সালের ১২ জুলাই তিনি দক্ষিণ আমেরিকাধীন চিলির লিনারেস প্রদেশের অন্তর্গত পারাল-এ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো। পিতার কাছ থেকে নিজের কাব্যপ্রতিভাকে লুকিয়ে রাখার জন্য কৈশোরে তিনি এই ছদ্মনামটি গ্রহণ করেন। নেরুদা নামটির উৎস চেক লেখক জান নেরুদা এবং পাবলো নামটির সম্ভাব্য উৎস হলেন পল ভারলেইন।
১৯১৭ সালের ১৮ জুলাই মাত্র তেরো বছর বয়সে দৈনিক সংবাদপত্র ‘লা মানানা’-তে তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। খুব অল্প বয়সেই তিনি কবি খ্যাতি অর্জন করেন। নেরুদার সাহিত্যকর্মে বিভিন্ন প্রকাশশৈলী ও ধারার সমাবেশ ঘটে। একদিকে তিনি যেমন লিখেছেন টোয়েন্টি পোয়েমস অফ লাভ অ্যান্ড আ সং অফ ডেসপায়ার-এর মতো কামোদ্দীপনামূলক কবিতা সংকলন, তেমনই রচনা করেছেন পরাবাস্তববাদী কবিতা, ঐতিহাসিক মহাকাব্য, এমনকি প্রকাশ্য রাজনৈতিক ইস্তাহারও। জীবদ্দশায় নেরুদা একাধিক কূটনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। একসময় তিনি চিলিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির সিনেটর হিসেবেও কার্যভার গ্রহণ করেন। কনজারভেটিভ চিলিয়ান রাষ্ট্রপতি গঞ্জালেস ভিদেলা চিলি থেকে কমিউনিজমকে উচ্ছেদ করার পর নেরুদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তার বন্ধুরা তাকে চিলির বন্দর ভালপারাইসোর একটি বাড়ির বেসমেন্টে কয়েক মাসের জন্য লুকিয়ে রাখেন। পরে গ্রেফতারি এড়িয়ে মাইহু হ্রদের পার্বত্য গিরিপথ ধরে তিনি পালিয়ে যান আর্জেন্টিনায়।
কয়েক বছর পরে নেরুদা সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্রপতি সালভাদর আলেন্দের এক ঘনিষ্ঠ সহকারীতে পরিণত হন। তিনি তাঁর কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার (১৯৫০), লেনিন শান্তি পুরস্কার (১৯৫৩), সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার (১৯৭১) লাভ করেন। চিলিতে অগাস্তো পিনোচেটের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভ্যুত্থানের সময়েই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন নেরুদা। তিন দিন পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাপে কামড়ানোর মেডিসিন চাই