জনসংখ্যার বিচারে চট্টগ্রামে ডায়রিয়া পরিস্থিতি তেমন খারাপ নয় বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মাঝে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুল হায়দার, ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সিভিল সার্জন বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ১৫টি উপজেলা। জেলার মোট জনসংখ্যা বিচারে দৈনিক দেড়শ বা দুইশ ডায়রিয়া রোগী পাওয়া গেলেও তা অস্বাভাবিক নয়। উদ্বেগের কারণও নেই। এরপরও নির্দিষ্ট কিছু এলাকা থেকে যখন বেশি রোগী আসছিল, বিষয়টি আমরা আইইডিসিআরকে জানাই। এর কারণ অনুসন্ধানে আইইডিসিআরের একটি টিম চট্টগ্রামে আসে। তারা উপদ্রুত এলাকা ঘুরে বাসা-বাড়ি থেকে পানির নমুনাসহ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।
তারা যেটুকু জানিয়েছে, প্রি-পোর্ট, ইপিজেড, পতেঙ্গা-হালিশহর, উত্তর আগ্রাবাদসহ উপদ্রুত এলাকাগুলোর পরিবেশ খুবই অস্বাস্থ্যকর। বাড়ি-ঘরের মেঝেতে স্যাঁতসেঁতে ভাব, যেখানে সেখানে খোলা ডাস্টবিন, ময়লা-আবর্জনা। সবমিলিয়ে খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। আর বেশির ভাগ বাসিন্দা পানি ফুটিয়ে পান করে না। তারা সরাসরি ওয়াসার লাইনের পানি পান করে। সেখানকার যে পরিস্থিতি, তাতে ডায়রিয়া-কলেরাসহ অন্যান্য রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়। মূলত এসব কারণেই সেখানে পানিবাহিত এসব রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করে আমরা চিঠি দেব। তারা যেন বিষয়টি দেখে।
এবার ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীও পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে এবারই চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরে তুলনামূলক বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে বা হচ্ছে। তবে তা ততটা উদ্বেগের নয়। যদিও ডেঙ্গুর প্রকোপের বিষয়ে সবাইকে আরও সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সিভিল সার্জন। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান সিভিল সার্জনের।
এদিকে, গতকালও নগরের চকবাজার-প্রবর্তক মোড়সহ কয়েকটি স্থানে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের টিম। তিনটি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করলেও কোনো প্রতিষ্ঠানে গুরুতর অনিয়ম পাওয়া যায়নি বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে। অবশ্য, উপজেলা পর্যায়ে এদিন (গতকাল) মোট ৬টি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাউজান, মীরসরাই, পটিয়া ও সাতকানিয়া উপজেলায় ১টি করে এবং ফটিকছড়ি উপজেলায় ২টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।












